ঢাকা: এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষকরা তাদের পূর্বঘোষিত ‘মার্চ টু যমুনা’ কর্মসূচি বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) সন্ধ্যায় স্থগিত করেছেন। একই সাথে, দাবি আদায় না হলে আগামীকাল শুক্রবার থেকে আরও কঠোর কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছেন তারা।বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) সন্ধ্যায় আন্দোলনরত শিক্ষকরা এ তথ্য জানান।আন্দোলনকারী শিক্ষক নেতাদের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, আগামীকাল শুক্রবার (১৭ অক্টোবর) বেলা ২টার মধ্যে যদি তাদের দাবি মেনে নিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি না হয়, তবে তারা আমরণ অনশন কর্মসূচি শুরু করবেন। একইসঙ্গে, সব এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষকদের কর্মবিরতি অব্যাহত থাকবে।এর আগে, এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণ প্রত্যাশী জোটের সদস্য সচিব অধ্যক্ষ দেলোয়ার হোসেন আজীজি জানিয়েছিলেন, বিকেল ৫টার মধ্যে দাবি বিষয়ে কোনো ইতিবাচক সিদ্ধান্ত না আসলে তারা ‘মার্চ টু যমুনা’ কর্মসূচি পালন করবেন। শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. সি আর আবরারের সাথে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে আলোচনা শেষে তিনি এই ঘোষণা দেন। শিক্ষকদের ১৫ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল এই আলোচনায় অংশ নেয়।তবে, আলোচনা ফলপ্রসূ হয়নি বলে দাবি করেন অধ্যক্ষ আজীজি। তিনি শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক চৌধুরী রফিকুল আববারকে (সি আর আবরার) অভিযুক্ত করে বলেন, “বিভিন্ন সংস্থার চাপে বৈঠকের নামে তিনি আইওয়াশ করেছেন, এটা শিক্ষকদের সঙ্গে প্রহসন।”শিক্ষকদের মূল দাবি:তিনটি দাবি (বাড়িভাড়া, চিকিৎসা ভাতা ও উৎসব ভাতা) আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।দাবিগুলো আগামী বাজেট নয়, এই মাস থেকেই কার্যকর করতে হবে।অধ্যক্ষ আজীজি আলোচনা প্রসঙ্গে আরও বলেন, ওনারা আলোচনার নামে আই-ওয়াশ করেছেন। আমরা শিক্ষা উপদেষ্টাকে বলেছি, আমাদের ডাল-ভাতের ব্যবস্থা করেন। কিন্তু উনি তার বক্তব্যে অনড়। আমরা বলেছি, এখন ১০ শতাংশ দেবেন, পরবর্তী বাজেটে ১০ শতাংশ দেবেন। পুরো বিষয়টি স্পষ্টভাবে প্রজ্ঞাপন আকারে প্রকাশ করতে হবে।অন্যদিকে, শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক চৌধুরী রফিকুল আববার (সি আর আবরার) জানিয়েছেন, বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের জন্য বাড়িভাড়া ৫ শতাংশ অথবা ন্যূনতম ২ হাজার টাকা করার জন্য অর্থ মন্ত্রণালয়কে সুপারিশ করা হয়েছে।শিক্ষা উপদেষ্টা বলেন, শিক্ষকরা ২০ শতাংশ পর্যন্ত বাড়ি ভাড়ার দাবি তুলেছেন। তবে সরকার সামর্থ্য অনুসারে ৫ শতাংশ এবং ন্যূনতম ২০০০ টাকা সুপারিশ করছে এখন। নতুন বেতন কমিশনের সুপারিশে সরকার আগামী বছর শিক্ষকদের আরও সম্মানজনক কাঠামো দিতে সচেষ্ট হবে।শিক্ষক নেতারা এই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে শতভাগ হারে বাড়ি ভাড়া দাবি করেছেন। তারা জানান, ১৩ আগস্টের মধ্যে উদ্যোগ না নিলে আন্দোলনে যাওয়ার কথা থাকলেও ১১ আগস্ট এনএসআইয়ের পক্ষ থেকে ফোন করে ২ হাজার টাকা বাড়িভাড়ার বিষয়টি জানানো হয়, যা পরে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের আলোচনাতেও ওঠে এবং তারা তা প্রত্যাখ্যান করেন।উল্লেখ্য, ২০ শতাংশ বাড়িভাড়া ভাতা, ১৫০০ টাকা চিকিৎসা ভাতা এবং কর্মচারীদের ৭৫ শতাংশ উৎসব ভাতার দাবিতে বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা টানা পঞ্চম দিনের মতো কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অবস্থান করছেন। পাশাপাশি, সারা দেশে এমপিওভুক্ত বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষকদের কর্মবিরতিও চলছে।
Discussion about this post