ঢাকা: বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করতে প্রয়োজনে বাবা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মতো জীবন উৎসর্গ করতে প্রস্তুত রয়েছেন বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বাংলাদেশকে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের জন্য যোগ্য হিসেবে জাতিসংঘর স্বীকৃতি উদযাপনে বৃহস্পতিবার আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে একথা বলেন তিনি। কক্সবাজারের সমুদ্র সৈকত লাবনি পয়েন্টে ‘উন্নয়নের নতুন জোয়ার: বদলে যাও কক্সবাজার’ নামক এই অনুষ্ঠানে সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যোগ দেন প্রধানমন্ত্রী। অনুষ্ঠানের সূচনায় প্রধানমন্ত্রী চাটগাঁইয়া ভাষায় বলেন, ‘তোঁয়ারার লাই আঁর পেট পুড়ে’। প্রধানমন্ত্রীর মুখে চট্টগ্রামের ভাষা শুনে উচ্ছ্বাসে ফেটে পড়েন কক্সবাজারের মানুষ। সব বাধা অতিক্রম করে দেশের মানুষের জন্য একটি সুন্দর ও উন্নত জীবনের ব্যবস্থা করে যাওয়ার প্রত্যয় রেখে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি কক্সবাজারবাসী এবং সমগ্র বাংলাদেশের জনগণের কাছে প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি, জনগণের ভাগ্য পরিবর্তন করতে প্রয়োজনে আমি আমার বাবার মতো জীবন উৎসর্গ করব।’ শেখ হাসিনা জানান, তার ছোটবেলা থেকেই কক্সবাজারে যেতে ইচ্ছে করতো আর বাবা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সময় পেলেই তাদেরকে নিয়ে কক্সবাজার যেতেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু বেশিরভাগ সময় জেলে থাকতেন। তাই জেল থেকে ছাড়া পেলে আমাদের কক্সবাজারে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করতেন। আমরা বাবার কাছে বায়না ধরতাম।’ কক্সবাজারকে ঘিরে সরকারের মহাপরিকল্পনার কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কক্সবাজারকে আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক এলাকা হিসেবে গড়ে তোলা হচ্ছে। এখানে এক্সক্লুসিভ পর্যটন এলাকা, স্টেডিয়াম, আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, মেডিক্যাল কলেজ, রেললাইন থেকে শুরু করে ব্যাপক উন্নয়ন চলছে।’ বাংলাদেশ এখন উন্নয়নশীল দেশের স্বীকৃতি পেয়েছে উল্লেখ করে সরকারপ্রধান বলেন, ‘নির্বাচনি ইশতেহারে দেওয়া অঙ্গীকার আমরা রক্ষা করেছি। শতভাগ বিদ্যুতের ব্যবস্থা করেছি। আজ বাংলাদেশের মানুষ ডিজিটাল দেশের সব সুযোগ-সুবিধা ভোগ করছেন। বর্তমান সরকার সাধারণ মানুষের কথা চিন্তা করে। তাই সাধারণ মানুষের ভাগ্যোন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছি। এদেশের মানুষের মুখে হাসি ফুটিয়েছি। ‘উন্নয়নের নতুন জোয়ার, বদলে যাওয়া কক্সবাজার’শীর্ষক এই অনুষ্ঠানের আয়োজক প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ। আর উৎসবটি বাস্তবায়ন করেছে কক্সবাজার জেলা প্রশাসন। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে শুরু হওয়া এই উৎসব রাতে আনুষ্ঠানিকভাবে উদযাপনের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী। কক্সবাজার জেলা শিল্পকলা একাডেমির শিশু শিল্পীদের পরিবেশনায় জাতীয় সংগীত পরিবেশনের পর ‘জয় বাংলা’ স্লোগানে মুখরিত হয় উৎসব স্থল। অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল, ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী, নৌ-পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী, যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল ও প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব আহমদ কায়কাউস উৎসবে বক্তব্য দেন অনুষ্ঠানে।
Discussion about this post