ঢাকা : রাজধানীর টিকাতুলীতে জয়কালী মন্দিরের সামনে কামরুন্নেসা সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির এক শিক্ষার্থীর মা বাসের ধাক্কায় নিহত হওয়ার ঘটনায় বিচার ও নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলনে নেমেছে শিক্ষার্থীরা। এসময় ‘প্রাণের বিনিময়ে কেনা দেশে প্রাণের দাম দিতে ভুলে যাওয়া বা অবহেলা শহীদদের প্রতি অসম্মান’- এমন বক্তব্য উঠে আসে শিক্ষার্থীদের মধ্য থেকে। আজ বৃহস্পতিবার বেলা ১১টা থেকে সরকারি বালিকা বিদ্যালয়, ওয়ারী উচ্চ বিদ্যালয়, নারিন্দা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় ও সেন্ট্রাল উইমেন্স কলেজের শিক্ষার্থীরা রাস্তা অবরোধ করে আন্দোলনে নামে। রাস্তা অবরোধ করে শিক্ষার্থীরা ‘আমার মা মরল কেন বিচার চাই, আর কত নিরীহ প্রাণ রাস্তায় ঝরবে, উই ওয়ান্ট জাস্টিস; ওই ওয়ান্ট জাস্টিস, আমার মা মরল কেন প্রশাসন জবাব চাই’- এরকম নানা স্লোগান দিতে থাকেন। শিক্ষার্থীরা বলেন, রাস্তায় আর কত রক্ত ঝরবে, প্রাণ দিয়ে কেনা দেশ যখন প্রাণের দাম দিতে ভুলে যায় তখন আমদের শহীদ ভাইবোন মা-বাবার অসম্মান করা হয়।’ গত সোমবার দুপুরে রাজধানীর ওয়ারীতে মেয়ে মরিয়ম রুহিকে (৮) নিয়ে রিকশায় করে স্থানীয় কামরুন্নেসা বালিকা বিদ্যালয় থেকে বাসায় ফেরার পথে নিহত হন মা রাফিকা পাঠান (২৭)। এছাড়া মিরপুর ভাসানটেক এলাকায় দুই মেয়েকে স্কুলে নিয়ে যাওয়ার পথে যাত্রীবাহী বাসের ধাক্কায় রিকশা থেকে ছিটকে পড়েন মা ও দুই মেয়ে। এতে প্রাণ হারান মা সাবিনা ইয়াসমিন, আহত হয় দুই মেয়ে হুমায়রা ও রাহি। আন্দোলনকালে শিক্ষার্থীরা সাত দফা দাবি পেশ করে- ১. দ্রুতবিচার ট্রাইবুনালে সব সড়কহত্যার বিচার করতে হবে ও পরিবারকে যথাযথ ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। ২. গণপরিবহণে নারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। ৩. জনসাধারণের নির্বিঘ্নে চলাচলের স্বার্থে সব ফুটপাত অবিলম্বে দখলমুক্ত করতে হবে এবং যথাস্থানে ফুটওভারব্রিজ অথবা জেব্রাক্রসিং অথবা বিকল্প পারাপারের ব্যবস্থা করতে হবে। ৪. ফিটনেসবিহীন, মেয়াদোত্তীর্ণ ও সব অবৈধ যানবাহন চলাচল অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে। ৫. চালকের ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রাপ্তির ক্ষেত্রে অবশ্যই প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা সুনিশ্চিত করতে হবে। ৬. ‘সড়ক পরিবহন আইন ২০১৮’ এর অবিলম্বে পূর্ণ বাস্তবায়ন করতে হবে। ৭. শ্রমিকদের নিয়োগপত্র নিশ্চিত করতে হবে এবং চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ বাতিল করে টিকিট ও কাউন্টারের ভিত্তিতে গোটা পরিবহণ ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজাতে হবে।
Discussion about this post