আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ইরানে একটি মাজারে বোমা হামলায় কমপক্ষে ১৫ জন নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে নারী ও শিশুও রয়েছে। আহত হয়েছেন আরও ৪০ জন। বুধবার দক্ষিণ ইরানের শিরাজ শহরে শিয়া ধর্মীয় উপাসনালয়ে হামলার পর হতাহতের এই ঘটনা ঘটে। ইরানের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম সংস্থা আইআরএনএ’র বরাত দিয়ে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে। ইরানের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমের ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বুধবার সন্ধ্যার প্রথম দিকে ইরানের দক্ষিণাঞ্চলীয় শিরাজ শহরের শাহ চেরাগ মাজারে এই হামলার ঘটনা ঘটে। তিনজন সশস্ত্র লোক মাজারে প্রবেশ করে সেখানে হামলা চালায়। তিন হামলাকারীর মধ্যে দুজনকে আটক করা হয়েছে। একজন পলাতক রয়েছে। ওই হামলা কারা করেছে তা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে তারা আইএস জঙ্গিগোষ্ঠীর সদস্য বলে মনে হয়েছে। ইরানের রাষ্ট্রীয় কর্তৃপক্ষের নিয়ন্ত্রণে পরিচালিত সংবাদমাধ্যম নউরের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হামলাকারী তিন ব্যক্তি ইরানের নাগরিক নন। হামলার সময় ঘটনাস্থলে থাকলেও বেঁচে যাওয়া এক ব্যক্তি আল-জাজিরাকে বলেন, আমরা নামাজের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। এমন সময় বন্দুকের গুলি করার শব্দ শুনতে পাই। তখন গুলির শব্দ শুনে আমরা অন্য দিক দিয়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছিলাম। কিন্তু এমন সময় দেখি আমার শরীর থেকে রক্ত ঝড়ে পড়ছে। হামলার শিকার ও প্রত্যক্ষদর্শী ওই ব্যক্তি আরও বলেন, কে বা কারা গুলি করছে আমি দেখতে পাচ্ছিলাম না। রাস্তা থেকেই গুলি করা শুরু হয়। এরপর অস্ত্রধারী ব্যক্তিরা মসজিদের দিকে এগিয়ে যেতে শুরু করেন। এ সময় তাঁরা সামনে যাকে দেখছিলেন তাঁকে গুলি করছিলেন। তবে আমি হামলাকারীদের দেখতে পাইনি। তেহরান বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈশ্বিক অধ্যয়ন বিভাগের একজন অধ্যাপক ফাওয়াদ ইজাদি বলেন, বন্দুকধারীদের উদ্দেশ্য ছিল মুসল্লিদের ওপর হামলা করা। আইএস জঙ্গিগোষ্ঠীর সদস্যরা সাধারণত এভাবে হামলা করে। ধর্মীয় স্থাপনায় হামলা চালায়। এই হামলার নেপথ্যে যারা থাকুক তারা ইরানের মানুষের কাছে আশ্রয় নেবে। ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহীদ রাইসি এ হামলার সমুচিত জবাব দেওয়ার হুমকি দিয়েছেন। উল্লেখ্য, ইরানের শিরাজ শহর হলো তীর্থযাত্রা ও পর্যটনের জন্য একটি জনপ্রিয় গন্তব্য। এর আগে ২০০৮ সালের এপ্রিল মাসে এই ধরনের সর্বশেষ হামলা হয়েছিল। সেসময় একটি মসজিদে পেতে রাখা বোমায় ১৪ জন নিহত হয়েছিলেন।
Discussion about this post