আন্তর্জাতিক ডেস্ক: বড়দিনের ছুটির প্রাক্কালে শক্তিশালী শীতকালীন তুষারঝড়ে যুক্তরাষ্ট্রের বেশ কয়েকটি অঙ্গরাজ্যে জীবনযাত্রা বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। গা হিম করা তুমুল এই তুষারঝড়ে অন্তত ১২ জনের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া কাবু হয়েছে অন্তত ২০ কোটির মতো আমেরিকান। ঝড়ের প্রভাবে কয়েকটি অঙ্গরাজ্যে ১৫ লাখের বেশি মানুষ বিদ্যুৎ সংযোগহীন হয়ে পড়েছেন। দুদিনে চার হাজার ৪০০টি ফ্লাইট বাতিল হয়েছে। অনেক জায়গায় জ্বালানি ফুরিয়ে যাওয়া জামাকাপড় পুড়িয়ে গা গরম করতে হচ্ছে তুষারে আটকে পড়া মানুষকে। যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দপ্তর ন্যাশনাল ওয়েদার সার্ভিস (এনডব্লিউএস) জানায়, দেশটির দক্ষিণাঞ্চলীয় অঙ্গরাজ্য টেক্সাস থেকে সর্ব উত্তরাঞ্চলীয় রাজ্য মাইন পর্যন্ত প্রায় সোয়া তিন হাজার কিলোমিটার অঞ্চলজুড়ে এ ঝড় হয়। এই ঝড়কে ‘যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসের অন্যতম বৃহৎ প্রাকৃতিক দুর্যোগ’ বলে শুক্রবার এক বিবৃতিতে উল্লেখ করেছে এনডব্লিউএস। ঝড়ের প্রভাব অনেকটা কমে এলেও এখনও দেশটির বেশিরভাগ অঙ্গরাজ্যে আবহাওয়া পুরোপুরি স্বাভাবিক হয়নি। লাখ লাখ বাড়িঘর ও প্রতিষ্ঠান এখনও বিদ্যুৎবিহীন অবস্থায় আছে। বিমানবন্দরগুলোতে ইতোমধ্যে বাতিল হয়েছে ৪ হাজার ৪০০ ফ্লাইট। এনডব্লিউএসের বরাতে এএফপি জানায়, পশ্চিমাঞ্চলীয় রাজ্য মন্টানার তাপমাত্রা নেমেছে মাইনাস ৪৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। রাজ্যের অধিকাংশ এলাকা ঢেকে গেছে বরফের পুরু স্তরে। এছাড়া মিশিগান, বাফেলো, নিউইয়র্ক, সাউথ ডাকোটা, কলরাডো, কানসাস, ওয়াইওমিং, টেনেসি, ওয়েস্ট ভার্জিনিয়া, কেন্টাকি, জর্জিয়া, নর্থ ক্যারোলাইনা, ওকলাহোমা রাজ্যে বেশ কিছু অঙ্গরাজ্যে এখনও অব্যাহত আছে তুষারপাত। এসব রাজ্যে তাপমাত্রা মাইনাস ৪২ ডিগ্রি পর্যন্ত নেমেছে। কানসাস, টেনেসি ও ওয়াইওমিং অঙ্গরাজ্যের আবহাওয়া বিভাগ জানিয়েছে, গত ২৬ বছরে এত নিম্ন তাপমাত্রা দেখা যায়নি। ঝড়ো হওয়া, তাপমাত্রা হ্রাস ও তুষারপাতের জেরে নিউইয়র্ক, ওয়েস্ট ভার্জিনিয়া, কেন্টাকি, জর্জিয়া, নর্থ ক্যারোলাইনা ইতোমধ্যে জরুরি অবস্থা জারি করেছে। সেই সঙ্গে জ্বালানি সংকট যাওয়ায় আবহাওয়াগত জরুরি অবস্থা জারির পাশাপাশি জ্বালানিগত জরুরি অবস্থাও ঘোষণা করেছে সাউথ ডাকোটা এবং উইসকনসিন।
Discussion about this post