ঢাকা: বর্তমান সঞ্চালন লাইন ব্যবহার করে ভারতের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে ২০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ রপ্তানি করতে চায় নেপাল। মঙ্গলবার (১৪ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশ-নেপাল বিদ্যুৎ খাতে সহযোগিতা বিষয়ক যৌথ স্টিয়ারিং ভার্চুয়াল সভায় নেপালের পক্ষ থেকে এ প্রস্তাব তুলে ধরা হয়। ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে যৌথ স্টিয়ারিং কমিটির ৩য় সভায় বাংলাদেশের পক্ষে বিদ্যুৎ বিভাগের সচিব মো. হাবিবুর রহমান এবং নেপালের পক্ষে বিদ্যুৎ, পানি সম্পদ ও সেচ সচিব দেবেন্দ্র কার্কি নিজ নিজ প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন। বিদ্যুৎ বিভাগ সূত্রে জানা যায়, সভায় নেপালে জলবিদ্যুৎকেন্দ্রের বাংলাদেশের বিনিয়োগ সম্ভাবনাসহ দুই দেশের বিদ্যুৎ খাতে সহযোগিতা বাড়ানোর বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা হয়। তবে দুই দেশের মধ্যে বিদ্যুৎ আমদানি-রপ্তানির কৌশল নিয়ে বিভিন্ন সময় নানা কথা হলেও এখনও তা বাস্তব রূপ পায়নি। আন্তঃদেশীয় সঞ্চালনের সম্ভব্যতা যাচাইয়ের কাজ চললেও অনেক কিছু নির্ভর করছে ভারতের ওপর। বাংলাদেশ-নেপাল সঞ্চালন লাইনের অংশবিশেষ নির্মিত হবে ভারতের ভূ-খণ্ডের মধ্য দিয়ে। তাই বাংলাদেশ-ভারত-নেপাল ত্রিপক্ষীয় সমঝোতার মাধ্যমে বিষয়টি নির্ধারণ হবে বলে মত প্রকাশ করা হয় বাংলাদেশ ও নেপালের যৌথ স্টিয়ারিং সভায়। এসময় নেপালের পক্ষ থেকে বর্তমান সঞ্চালন লাইন ব্যবহার করে ভারতের মাধ্যমে নেপাল থেকে ২০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ বাংলাদেশে রপ্তানির প্রস্তাব দেওয়া হয়। সভায় জানানো হয়, নেপালে সম্ভাব্য যে ৫টি জলবিদ্যুৎ প্রকল্প চিহ্নিত করেছে দেশটির সরকার, তার কোনটিতে বাংলাদেশি প্রতিষ্ঠানের বিনিয়োগের সুযোগ থাকবে; সে বিষয়ে নেপালের চলমান সমীক্ষার পর সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। নেপালে বিদ্যুৎ কেন্দ্রে অর্থায়ন ও যৌথভাবে প্রকল্প বাস্তবায়নে সম্ভাব্য প্রকল্প চিহ্নিত করা, উভয় দেশের মধ্যে বিদ্যুৎ আমদানি-রপ্তানির কৌশল নির্ধারণ এবং আন্তঃদেশীয় বিদ্যুৎ সংযোগের মাধ্যমে বিদ্যুৎ সঞ্চালনের সম্ভব্যতা যাচাইয়ে দুই দেশের প্রতিনিধিদের নিয়ে গঠন করা হয়েছে উৎপাদন ও সঞ্চালন বিষয়ক আলাদা দুটি টেকনিক্যাল দল। ভারতের জিএমআর গ্রুপের সহযোগিতায় নেপালে বাস্তবায়ন হতে যাওয়া ৯০০ মেগাওয়াট আপার কার্নালী জল বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে ৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ বাংলাদেশে আমদানির অগ্রগতি নিয়েও আলোচনা হয় সভায়। এসময় বাংলাদেশের পক্ষ থেকে জানানো হয়, বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড-পিডিবি, জিএমআর এবং এনভিভিএন এর মধ্যে এ বিষয়ে একটি চুক্তি চূড়ান্ত করার প্রক্রিয়ায় রয়েছে। এছাড়া নবায়নযোগ্য জ্বালানির সম্প্রসারণের অভিজ্ঞতা, জ্ঞান ও দক্ষতা বিনিময়, বিদ্যুৎখাতে সক্ষমতা বাড়ানোসহ বিভিন্ন বিষয়ে দুই দেশের সহযোগিতার অগ্রগতি নিয়ে আলোচনা হয় সভায়।বাংলাদেশ-নেপাল যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপ ও যৌথ স্টিয়ারিং কমিটির পরবর্তী সভা ২০২২ সালের মার্চ অথবা এপ্রিল ২০২২ সালে নেপালে হওয়ার কথা রয়েছে।
Discussion about this post