আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ভারতের উত্তরাখণ্ড রাজ্যে নিবন্ধন ছাড়াই পরিচালিত হচ্ছে এমন অভিযোগে হলদোয়ানির বনভুলপুরা এলাকায় সাতটি মাদ্রাসা সিলগালা করেছে স্থানীয় প্রশাসন। রোববার (১৩ এপ্রিল) জেলা প্রশাসন, পৌর কর্তৃপক্ষ এবং পুলিশ কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে গঠিত একটি যৌথ দল এই ‘বিশেষ পরিদর্শন অভিযান’ পরিচালনা করে এ সিদ্ধান্ত নেয়। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমস জানায়, অভিযানের সময় বেশ কয়েকটি মাদ্রাসার প্রয়োজনীয় নিবন্ধন এবং বিধি মেনে চলার প্রমাণ পাওয়া যায়নি। এর ফলে সাতটি মাদ্রাসা তাৎক্ষণিকভাবে সিল করে দেওয়া হয়। হলদোয়ানির সিটি ম্যাজিস্ট্রেট এ পি বাজপেয়ী বলেন, ‘আমরা মাদ্রাসাগুলোর বিরুদ্ধে বিশেষ অভিযান চালাচ্ছি। অনেক প্রতিষ্ঠান সরকারি নিয়ম লঙ্ঘন করে চলছে, যাদের নিবন্ধন নেই। আইন অনুযায়ী কড়া পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।’ তবে দ্য সিয়াসাত ডেইলি, মুসলিম মিরর এবং ইন্ডিয়ান আমেরিকান মুসলিম কাউন্সিল দাবি করেছে, শুধুমাত্র হলদোয়ানি নয়, সম্প্রতি উত্তরাখণ্ডজুড়ে অন্তত ১৭০টি মাদ্রাসা সিল করে দেওয়া হয়েছে। মূলত মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ এলাকাগুলোতেই এসব অভিযান চালানো হচ্ছে বলে জানা গেছে। বিশেষ করে বনভুলপুরার মতো এলাকায় প্রশাসনের তৎপরতা বাড়ানো হয়েছে। কর্মকর্তাদের মতে, জেলা প্রশাসন গত মাসে বনভুলপুরা এলাকার মাদ্রাসাগুলোর একটি প্রাথমিক জরিপ পরিচালনা করেছিল। জরিপে অবস্থান, ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীর সংখ্যা এবং উপলব্ধ সুযোগ-সুবিধার মতো বিশদ বিবরণ নথিভুক্ত করা হয়। গত ২৬ মার্চ উত্তরাখণ্ড সরকার জানায়, তারা রাজ্যজুড়ে সিল করে দেয়া ‘অবৈধ’ মাদ্রাসাগুলোর তহবিল তদন্ত করবে এবং এই বিষয়ে একটি প্রতিবেদন সরাসরি মুখ্যমন্ত্রীর কার্যালয়ে জমা দেয়া হবে। কর্মকর্তারা বলছেন, রাজ্যে প্রায় ৪৫০টি নিবন্ধিত মাদরাসা রয়েছে, যারা সরকারকে তাদের নথি, ব্যাংক অ্যাকাউন্ট এবং আয়-ব্যয়ের সম্পূর্ণ বিবরণ দিয়েছে। কিন্তু ৫০০টিরও বেশি মাদরাসা কোনো স্বীকৃতি ছাড়াই পরিচালিত হচ্ছে বলে দাবি করা হয়েছে। এই ঘটনার পর রাজনৈতিক ও সামাজিক পরিমণ্ডলে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। অনেকেই একে নিরাপত্তা ও নিয়মকানুন রক্ষার পদক্ষেপ হিসেবে দেখলেও, কেউ কেউ ধর্মীয় সম্প্রদায়ের প্রতি নির্দিষ্ট পক্ষপাত বা বৈষম্যের অভিযোগ তুলছেন। এ বিষয়ে এখনো কেন্দ্রীয় বা রাজ্য পর্যায়ের কোনো উচ্চপর্যায়ের প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
Discussion about this post