কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি: ভাঙনের আতঙ্কে দিন কাটছে কুড়িগ্রামের তিস্তাপাড়ের মানুষের। তিস্তা নদীর পানি যতই কমছে, ততই তীব্র হচ্ছে ভাঙন। ইতোমধ্যে প্রায় ৩০০ বাড়িঘর নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। ৪০ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে ভাঙনে দিশেহারা জনপদের মানুষ। তিস্তা রেলওয়ে ব্রিজ থেকে চিলমারী পর্যন্ত ৪০ কিলোমিটার এলাকা ভাঙনের কবলে। সর্বগ্রাসী তিস্তা মুহূর্তেই গিলে ফেলছে সবকিছু। গত এক সপ্তাহে শুধু গতিয়াসাম গ্রামের ২৭৩টি পরিবার ভিটেমাটি হারিয়ে সর্বস্বান্ত মানুষ। ভুক্তভোগী এক বৃদ্ধ বলেন, ‘তিস্তা আমাকে সর্বস্বান্ত করল। জমি-জিরাত, ঘরবাড়ি সবকিছু ধ্বংস করে দিল। আরেক ভুক্তভোগী বলেন, তিস্তা নদী একে একে চারবার আমার বাড়ি ভেঙে নিয়ে গেছে। এক নারী বলেন, নদীভঙনে আমরা সর্বস্বান্ত। পরিবার-পরিজন নিয়ে এখন কোথায় যাব- কিছু ভেবে পাচ্ছি না। কোথায় যাব, কোনায় না যাব- কোনো পথ খুঁজে পাচ্ছি না। রাজারহাটের গতিয়াসাম, সরিষাবাড়ী ও বগুড়াপাড়া গ্রামে ভাঙনের তীব্রতা বেশি। প্রতিদিন ভিটেমাটি, আবাদি জমি ও গাছপালা নদীতে বিলীন হচ্ছে। ভাঙনের ভয়ালরূপে বাড়িঘর সরিয়ে নিতে হিমশিম খাচ্ছে দিশেহারা মানুষ। শেষ সম্বলটুকু হারিয়ে অনেকে আশ্রয় নিয়েছেন অন্য এলাকায়। ঘরবাড়ি ভেঙে অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া এক ব্যক্তি বলেন, নদী ভাঙতে ভাঙতে একেবারে বাড়ির কিনারে এসে পড়েছে। এখন ঘরবাড়ি ভেঙে কোথায় নিয়ে যাব? আমার তো আর কোনো জায়গা-জমি নেই।কর্তৃপক্ষ এখনও কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেয়নি বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। পানি উন্নয়ন বোর্ড জানায় আপদকালীন প্রস্তুতির পাশাপাশি স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আরিফুল ইসলাম বলেন, ভাঙন ঠেকাতে আমরা বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছি। গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো; স্কুল-কলেজ ও অন্যান্য অবকাঠামো রক্ষার জন্য জরুরি ভিত্তিতে কাজ করছি। তিস্তাকে ঘিরে যে মহাপরিকল্পনা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে; সেটি যদি অনুমোদন হয় তাহলে এই এলাকার নদী সমস্যা দূর হবে বলে আশা করছি।
Discussion about this post