ঢাকা: বিচারক আদেশ দিলেও আদালতের হাজতখানায় বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর সঙ্গে তার স্ত্রীকে পুলিশ দেখা করতে দেয়নি বলে অভিযোগ উঠেছে। বুধবার মামলার হাজিরার জন্য কেরানীগঞ্জের ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে সিএমএম কোর্টে আনা হয় রুহুল কবির রিজভীকে। কারাগার থেকে আদালতে আনার পর তাকে রাখা হয় হাজতখানায়। পরে তার শারীরিক অসুস্থতা ও মামলার বিষয়ে স্ত্রী আরজুমান আরা বেগম রিজভীর সঙ্গে দেখা করতে আইনজীবীর মাধ্যমে আদালতের অনুমতি চান। আদালত আবেদনটি মঞ্জুর করে সাক্ষাতের অনুমতি দেন। রুহুল কবির রিজভীর ব্যক্তিগত চিকিৎসক ডা. রফিকুল ইসলামকেও সাক্ষাতের অনুমতি দেওয়া হয়। কিন্তু হাজতখানার ওসি রিজভীর সঙ্গে তার স্ত্রী এবং ব্যক্তিগত চিকিৎসককে সাক্ষাৎ করতে দেননি বলে অভিযোগ করেন রিজভীর স্ত্রী ও তার আইনজীবী। দুই ঘণ্টা কারাগারের হাজতখানায় রাখার পর দুপুর সাড়ে ১২টায় কেরানীগঞ্জ কারাগারে নেওয়ার জন্য প্রিজনভ্যানে তোলা হয়। রুহুল কবির রিজভীর প্যানেল আইনজীবী মশিউর রহমান শান্ত বলেন, ‘রুহুল কবির রিজভী বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব, যিনি শারীরিকভাবে অত্যন্ত অসুস্থ। তিনি ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, হার্টসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত। তিনি গত ৮ ডিসেম্বর থেকে পল্টন থানার মামলায় কারাগারে বন্দী। তার অসুস্থতা ও মামলা জনিত কারণে স্ত্রী আরজুমান আরা বেগম ও চিকিৎসকের সাক্ষাৎ প্রদান জরুরি। এই বিষয়ে আমরা আদালতের কাছে আবেদন করলে তা মঞ্জুর করা হয়। কিন্তু হাজতখানার ওসি আদালতের আদেশকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে ক্ষমতার অপব্যবহার করেছেন।’ এ বিষয়ে হাজাতখানার ওসির বক্তব্য পাওয়া যায়নি। রিজভীর সহধর্মিণী আরজুমান আরা বেগম বলেন, ‘আদালতে রুহুল কবির রিজভীকে দেখার পর নিজেকে বিশ্বাস করাতে পারিনি। রিজভী শারীরিকভাবে অত্যন্ত দুর্বল হয়ে পড়েছেন। তার শরীর ভালো নেই। তার উন্নত চিকিৎসা দরকার। আমরা তার নিয়মিত খোঁজখবর পাই না।’ এর আগে গত ২৩ জানুয়ারি রিজভী কারাগারে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। আরজুমান আরা বেগম বলেন, ‘আজকে আদালত আমাকে ও ডা. রফিকুল ইসলামকে রিজভীর সঙ্গে দেখা করার অনুমতি দিলেন। কিন্তু হাজতখানার ওসি সেই আদেশকে তোয়াক্কা করলেন না। আমাদেরকে তিনি দুই ঘণ্টা অপেক্ষা করিয়েও দেখা করতে দেননি।’ উল্লেখ্য, গত ১০ ডিসেম্বর বিএনপির ঢাকা বিভাগীয় গণসমাবেশকে ঘিরে ৭ ডিসেম্বর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে দলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়। ওইদিনই বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অভিযান চালিয়ে সাড়ে চার শতাধিক নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়। সেদিন রুহুল কবির রিজভীকেও আটক করে কারাগারে নেওয়া হয়। সম্প্রতি তাকে বিভিন্ন মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। তিনি কারাগারে যাওয়ার আগে দলের বিভিন্ন বিষয়ে গণমাধ্যমের সাথে নিয়মিত কথা বলতেন। বিশেষ করে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে ও হামলা-মামলা নিয়ে নিয়মিত সংবাদ সম্মেলন করতেন রিজভী।
Discussion about this post