ঢাকা: বিচারপতিদের বিরুদ্ধে করা বিএনপিপন্থি আইনজীবীদের সমাবেশ ও মিছিল করার ঘটনায় তাদের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগ করেছেন আওয়ামী লীগপন্থি আইনজীবীরা। মঙ্গলবার সকালে আইনজীবী নাহিদ সুলতানা যুথী প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বেঞ্চে একটি আবেদন করেন। পরে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘যেহেতু বেঞ্চ পুনর্গঠনের প্রয়োজন রয়েছে কাজেই আজকে তিনি এই অভিযোগ শুনবেন না। অভিযোগটি তিনি তার সহকারীর কাছে জমা দিতে বলেছেন।’ সোমবার বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সাম্প্রতিক দেয়া সব বক্তব্য অনলাইন থেকে সরানোর আদেশ দেয়াকে কেন্দ্র করে হট্টগোলের মধ্যে এজলাস ছেড়ে যান দুই জন বিচারপতি। সাড়ে ৩ ঘণ্টা পর তারা বিচারকাজ শুরু করেন। দুপুর ২টা ৩৫ মিনিটে বিচারপতি মো. খসরুজ্জামান ও বিচারপতি মো. খায়রুল আলম এজলাসে আসন গ্রহণ করে বিচার কাজ শুরু করেন। এর আগে বেলা ১১টায় তারেক রহমানের সাম্প্রতিক দেয়া সব বক্তব্য অনলাইন থেকে সরানোর আদেশ দেয়াকে কেন্দ্র করে হট্টগোলের মধ্যে এজলাস ছেড়ে যান দুই বিচারপতি। হাইকোর্টের বিচারপতি মো. খসরুজ্জামানকে উদ্দেশ্য করে বিএনপির আইনজীবীরা বলেন, একপক্ষের বক্তব্য না শুনেই ৩০ সেকেন্ড সময়ের মধ্যে আপনি তারেক রহমানের বিরুদ্ধে আদেশ দিয়েছেন। এটা বিচার বিভাগের ইতিহাসে কলঙ্কজনক অধ্যায় হয়ে থাকবে। আপনি কোর্টটাকে নষ্ট করে দিলেন। প্রথমে বিএনপির জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এ জে মোহাম্মদ আলী বলেন, ‘আমরা আপনার বিরুদ্ধে প্রধান বিচারপতির কাছে অনাস্থা জানিয়েছি। আপনি বায়াসড, একজন পক্ষপাতদুষ্ট বিচারক। আপনার থেকে আমরা ন্যায়বিচার পাব না। এ কারণে আপনার কোর্টে তারেক রহমানের কোনো মামলা চলতে পারে না।’ তখন বিচারপতি মো. খসরুজ্জামান বলেন, ‘আপনাদের ব্যারিস্টার কাজলকে শুনেছি।’ কোর্টে উপস্থিত থাকা ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল সঙ্গে সঙ্গে বিচারপতির বক্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়ে বলেন, ‘আপনি আমাকে শুনানি করতে দেননি। আপনি ৩০ সেকেন্ড সময় নিয়ে তারেক রহমানের বিরুদ্ধে আদেশ দিলেন। এটা আপনি করতে পারেন না। কোর্টের পরিবেশকে আপনি নষ্ট করে দিচ্ছেন।’ ব্যারিস্টার কায়সার কামাল বলেন, ‘আমাদের বক্তব্য আপনার শুনতে হবে। আমাদের বক্তব্য না নিয়ে কোনো অর্ডার পাস করতে পারেন না। আপনি কি তারেক রহমানের বিরুদ্ধে নীলনকশার রায় দেয়ার জন্য বিচারকের আসনে বসেছেন?’ বিচারপতি মো. খসরুজ্জামান বলেন, ‘আমাদের আদেশের বিরুদ্ধে আপনারা আপিল বিভাগে যেতে পারেন।’ এ সময় বিএনপির আইনজীবীরা তাকে পক্ষপাতদুষ্ট বিচারক বলে চিৎকার, চেঁচামেচি করতে থাকেন। একপর্যায়ে কোর্টে উপস্থিত থাকা আওয়ামী লীগপন্থি আইনজীবীরা বিএনপির আইনজীবীদের উদ্দেশে বলেন, ‘আপনারা আদালতকে এভাবে প্রেসার ক্রিয়েট করবেন না।’ এ কথা বলার সঙ্গে সঙ্গে দুই পক্ষের আইনজীবীদের মধ্যে হট্টগোল ও হইচই শুরু হয়। কোর্টে অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়। একপর্যায়ে বিচারপতিরা এজলাস ছেড়ে খাসকামরায় চলে যান। বিচারকাজ বন্ধ হয়ে যায় আদালতের।
Discussion about this post