স্টাফ রিপোর্টার(সিলেট): ঢাকা-সিলেট রুটে তিনটি এয়ারলাইন্সের ফ্লাইট চলাচল করে। এরমধ্যে রয়েছে সরকারি এয়ারলাইন্স বিমান বাংলাদেশসহ বেসরকারি এয়ারলাইন্স ইউএস বাংলা ও নভোএয়ার। সবচেয়ে কম মূল্যে আকাশ পথে সিলেট-ঢাকা ও ঢাকা-সিলেট যাতায়াত করা যায় বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সে। এ এয়ারলাইন্সের সর্বনিম্ন ভাড়া ৩ হাজার ৫ শত টাকা আর বেসরকারি এয়ারলাইন্স দুটির ভাড়া কমপক্ষে ৪ হাজার ৫শত টাকা। এ অবস্থায় সিলেটের যাত্রীরা কম টাকায় বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স দিয়ে ঢাকায় যাতায়াত করেন। ফলে দিন দিন ইউএস বাংলা ও নভোএয়ারের যাত্রী সংখ্যা কমতে থাকে। সূত্র জানায়, এ পরিস্থিতি বেসরকারি এ দুটি এয়ারলাইন্স কর্তৃপক্ষ বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলীর কাছে নিজেদের ক্ষতির কথা তুলে ধরেন। পরে জরুরি মিটিংয়ে বসেন বিমান প্রতিমন্ত্রী। তিনি বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স কর্তৃপক্ষকে ইউএস বাংলা ও নভোএয়ার এয়ারলাইন্সের সঙ্গে সমন্বয় করে নতুন ভাড়া নির্ধারণ করতে বলেন। ফলে বেসরকারি এ দুটি এয়ারলাইন্সের কারণে বাড়তে যাচ্ছে বিমান বাংলাদেশের ভাড়া। এদিকে শুক্রবার সকালে সিলেট এমএজি ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ‘ভূমি অধিগ্রহণ জটিলতা নিরসন’ নিয়ে অনুষ্ঠিত এক বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী ভাড়া বৃদ্ধির এ ইঙ্গিত দেন। প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আপনারা জানেন বিমান বাংলাদেশ ছাড়াও ইউএস বাংলা ও নভোএয়ার সিলেটে ফ্লাইট অপারেট করছে। কিন্তু বেসরকারি এয়ারলাইন্স দুটি অভিযোগ করে তাদের সঙ্গে বিমানের ভাড়া সমন্বয় করার দাবি জানান। কোনো এক মাসে নভোএয়ারের ২০০ কোটি টাকা ক্ষতি হয়েছে বলে জানান তারা। আমরা মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে ও ফ্লাইট চালু রাখতে দ্রুত একটি বৈঠক করি। বৈঠক শেষে বিমান বাংলাদেশকে বিমানের ভাড়া যাতে বেসরকারি বিমান সংস্থার সঙ্গে সমন্বয় করে ভাড়া নির্ধারণ করতে বলেছি। যাতে বেসরকারি বিমান সংস্থাগুলো ঠিকে থাকতে পারে।’ এদিকে সিলেট-নিউইয়র্কে সরাসরি ফ্লাইট চালু করার চিন্তা করছে সরকার। এমন তথ্য দিয়ে তিনি আরো বলেন- ‘আমরা ঢাকা থেকে সরাসরি টরেন্টো (কানাডা) ফ্লাইট চালু করেছি। গত পরশু দিন ২৯৭ জনের ক্যাপাসিটির এ বিমানের ৭৫ জনই ভারতের যাত্রী ছিলেন। এছাড়া আমরা নেপাল, ভুটান ও কলকাতার যাত্রী পেয়েছি। প্রধানমন্ত্রী চিন্তা করেন সিলেট, কক্সবাজার ও চট্টগ্রাম বিমানবন্দরকে যেন রিজিওনাল হাব হিসেবে আমরা ব্যবহার করতে পারি। সেই চিন্তাভাবনা বাস্তবায়নে আমরা রানওয়ের ক্যাপাসিটি বৃদ্ধি করেছি। আর আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন করতে নতুন টার্মিনাল ভবনের কাজ চালু করেছি। আমরা আমরা এতদূর অগ্রসর হয়েছি যে- হয়তো কিছুদিনের মধ্যে সিলেট থেকে নিউইয়র্কে সরাসরি ফ্লাইট চালু করতে যাবো।’ আন্তর্জাতিক ফ্লাইটের ভাড়া বৃদ্ধি প্রসঙ্গে মাহবুব আলী বলেন- ‘বিমানের ভাড়া সবসময় রিজনেবল। কিছুদিন আগে কোভিড পরবর্তী সময়ে বিপুল সংখ্যক লোক বিদেশে গেছেন। যার কারণে প্রত্যেকটা এয়ারলাইন্সেন চাহিদা বেশি। ফলে বিমানের ভাড়া বৃদ্ধি পেয়েছে।’ শাহজালাল বিমানবন্দরের নির্মিতব্য টার্মিনালের কাজ শেষ হলে বিমানের ভাড়া কমার আশা প্রকাশ করে প্রতিমন্ত্রী বলেন- ‘এখন আমাদের দেশে সামান্য বিমান ফ্লাইট অপারেট করছে। এজন্য বিমান যাত্রীদের ভাড়া বেশি দিতে হচ্ছে। তবে যাত্রীদের সুবিধার কথা চিন্তা করে ও বিমান ভাড়া কমিয়ে আনতে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নতুন টার্মিনাল নির্মাণ করা হচ্ছে। এ টার্মিনালের কাজ শেষ হলে নতুন করে অনেক এয়ারলাইন্স ফ্লাইট অপারেট করবে। ফলে একটা প্রতিযোগিতা সৃষ্টি হবে। এতে করে বিমানের ভাড়াও কমবে। আমরা সে লক্ষে কাজ করছি। যাতে আমাদের মানুষ রিজেনেবল ও কম টাকা ভাড়া দিয়ে বিদেশে যেতে পারেন।’ এসময় পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আবদুল মোমেন, বিমান মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মোকাম্মেল হোসেন, সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার ড. মোশাররফ হোসেন, সিলেটের জেলা প্রশাসক মো. মজিবর রহমান, সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি (ভারপ্রাপ্ত) সাবেক সাংসদ শফিকুর রহমান চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দীন খান, সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি বীরমুক্তিযোদ্ধা মাসুক উদ্দিন আহমদ, সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক জাকির হোসেন উপস্থিত ছিলেন।
Discussion about this post