ঢাকা: আওয়ামী লীগ সরকারের নানা অপরাধকে আড়াল করতেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনে বিএনপির বিরুদ্ধে ‘অবান্তর’ কথা বলেছেন বলে মন্তব্য করেছেন দলটির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, ‘সরকার সুপরিকল্পিতভাবেই দেশের বিরুদ্ধে, জনগণের বিরুদ্ধে, গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। আওয়ামী লীগ আজীবন ক্ষমতা ধরে রাখতে চায়। আর এই ক্ষমতা ধরে রাখতে গিয়ে তারা গুম, খুন, ক্রসফায়ারের মতো অপরাধ করছেন। কিন্তু এসব করে তারা পার পাবেন না। এদেশের মানুষের আদালতে এই সরকারের বিচার হবে।’ ঢাকার নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে রবিবার দুপুরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। রিজভী বলেন, ‘ওয়াশিংটনে এক মতবিনিময় সভায় প্রধানমন্ত্রী বলেছেন বিএনপি আমলের দুর্নীতি আর নৃসংসতা সবাইকে জানতে হবে। কেন তিনি এই কথা বলছেন? আজকে প্রতিবছর লাখো কোটি টাকা পাচার হচ্ছে, একটা দরজা জানালার পর্দার দাম ২২ লক্ষ টাকা, খিচুড়ি রান্না শেখার জন্য, পুকুর সাঁতার কাটার জন্য সব সরকারি কর্মকর্তারা বিদেশে যাচ্ছেন জনগণের টাকায় ট্রেনিং নেওয়ার জন্য। যেটা হাজার হাজার বছর ধরে এদেশের মানুষ নিজের অভিজ্ঞতা এবং নিজেদের যে জ্ঞান সেটা দিয়েই তারা এসব কাজ শিখে এসেছে।’ ‘এই যে রাষ্ট্রীয় তহবিল এটাকে নিয়ে যে নয়ছয় এবং এর মাধ্যমে সরকারের যে মহাদুর্নীতির মুখোশ বেরিয়ে এসেছে সেটাকে আড়াল করার জন্য এখন প্রধানমন্ত্রী বিএনপি আমলের দুর্নীতি আর নৃসংসতা সবাইকে জানতে হবে। আপনি (প্রধানমন্ত্রী) ১৪ বছর ধরে এই কুৎসা রটিয়ে আসছেন।’ বিএনপি মুখপাত্র বলেন, ‘বিতর্কিত আর প্রতিদ্বন্দিতাহীন ভোট করে ১৩ বছর ক্ষমতায় থেকে সমস্ত মিডিয়াকে নিয়ন্ত্রণ করে অপপ্রচারের যে ঢালাও কাহিনী তারা মানুষকে শুনিয়েছে সেই কাহিনী মানুষ বিশ্বাস করেনি। আজকে তারা যে মহাদুর্নীতির মহাকীর্তি তারা অর্জন করেছে, এটা নিয়ে দেশে বিদেশের মানুষের মুখে ছি ছি পড়ে গেছে। তাদের সকল অপকর্ম দেশে বিদেশে সকল মানুষের মুখে মুখে। এটি ঢাকার জন্যই প্রধানমন্ত্রী ওয়াশিংটনে মতবিনিময় সভায় এই অবান্তর অমূলক কথা বলেছেন।’ রিজভী বলেন, ‘যেহেতু তাদের (সরকারের) অবৈধ সত্ত্বা। তারা যে ক্ষমতায় আছে তাদের কোনো নির্বাচনী বৈধতা নেই। তাদের এই অবৈধ সত্ত্বার কারনে আজ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এবং দেশের মানুষ প্রত্যেকটি জায়গা থেকে তাদের প্রতি যে ধিক্কার নেমে এসেছে এটাকে আড়াল করার জন্য তারা নানা ধরনের মায়াজাল তৈরির চেষ্টা করছেন।’ ‘সরকারের নৃশংসতার জন্য আন্তর্জাতিকভাবে যে নিষেধাজ্ঞা এসেছে সেটিকে আড়াল করার জন্য প্রধানমন্ত্রী ওয়াশিংটনের মতবিনিময় সভায় বলেছেন বিএনপি আমলের দুর্নীতি আর নৃসংসতা সবাইকে জানতে হবে।’ তিনি বলেন, বিএনপি’র আমলে যদি সত্যিকার অর্থেই কোন অন্যায় হতো, যদি কোনো ধরনের নৃসংসতা হতো, তাহলে তো আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছ থেকে এক ধরনের নিষেধাজ্ঞা আসতো বিএনপির সময়ে। এই ধরনের নিষেধাজ্ঞা আসেনি।’ ‘উনি (প্রধানমন্ত্রী) যেভাবে নাটক তৈরি করেন বাংলাদেশে আর কেউ কোনোদিন পারেনি। তিনি মিডিয়াকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন র্যাব-পুলিশ দিয়ে গনমাধ্যমকে হুমকি দিতে পারেন তারপরও তো আন্তর্জাতিক সম্পদায় চোখ বন্ধ করে রাখেনি। আজকে সারা পৃথিবীর মানুষ জানে সরকারের নিষ্ঠুর নির্যাতনের কথা, তার অপশাসনের কথা, তার কুকীর্তির কথা। তিনি আজকে গোটা জাতিকে জিম্মি করে রেখেছেন।’ সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ, প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক এবি এম মোশাররফ হোসেন প্রমূখ উপস্থিত ছিলেন।
Discussion about this post