ঢাকা: জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. মশিউর রহমান বলেন, ‘শিক্ষকদের দক্ষতা বৃদ্ধিতে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় এবং মন্ত্রণালয় মিলে নতুন নতুন প্রশিক্ষণ কার্যক্রম গ্রহণ করেছে। ঠিক এই মুহূর্তে দেশব্যাপী জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত কলেজের শিক্ষকদের বিষয়ভিত্তিক প্রশিক্ষণ অনলাইনে চলছে। আমরা দেশে এবং বিদেশে প্রশিক্ষণের কার্যক্রম নিশ্চিত নিতে যাচ্ছি। সকল শিক্ষককে অনুরোধ করবো, ওই প্রশিক্ষণ থেকে আপনারা কেউ নিজেদেরকে বঞ্চিত করবেন না।’ শুক্রবার (১৮ মার্চ) রাজধানীর মিরপুর বাংলা উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে স্বাধীনতা শিক্ষক পরিষদ (স্বাশিপ) আয়োজিত জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শুভ জন্মদিন ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে আলোচনা সভায় সম্মানিত অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন উপাচার্য। দেশের শিক্ষকদের বিভিন্ন দাবি-দাওয়া সম্পর্কে উপাচার্য ড. মশিউর রহমান বলেন, ‘আমি নিশ্চয়ই শিক্ষকদের সকল দাবি-দাওয়ার সঙ্গে একমত। মনে করি, শিক্ষকদের এখনো অনেক চাওয়া-পাওয়ার আছে এবং সেটি দিতে হবে। একইসঙ্গে মনে করি, এমন বৈষয়িক বিষয় যেন আমাদের পেয়ে না বসে যার কারণে আমাদের আসল সৌন্দর্য হারিয়ে যায়। শিক্ষকদের আসল সৌন্দর্য হচ্ছে একটি ভালো লেখায়, নতুন কবিতায়, বিজ্ঞানাগারে নতুন সৃষ্টিতে, নতুন ধরনের গবেষণায়। আমরা যেন সেটি থেকে নিজেদের না হারাই। স্বাধীনতার ৫০ বছর পার করছি। শিক্ষকদের জরাজীর্ণ দশা ছিল। আমি বলবো না সব কেটে গেছে। এখনো আছে। সেই জরাজীর্ণ দশার শিক্ষকরাই এদেশের সবচাইতে সৎ, আলোকিত, গুণীজন, শ্রদ্ধাভাজন মানুষ। কিন্তু তাহলে কেন সবচেয়ে সৎ ও আলোকিত মানুষ কখনো কখনো অনুভব করে যে, তারা পেশাগত জায়গায় বঞ্চিত। এর উত্তর পাওয়া যায় আমাদের জাতীয় সংগীতে, বঙ্গবন্ধুর লেখা অসমাপ্ত আত্মজীবনী পড়লে। পৃথিবীর ইতিহাসে যখনই কেউ বড় কিছু করেছে, সৃজনশীল কিছু করেছে, তাদের জীবনে বৈষয়িক অর্জন সবচেয়ে কম হয়েছে। কিন্তু সেই বৈষয়িক অর্জন নেই বলে নজরুলের লেখা বন্ধ হয়নি। রবীন্দ্রনাথের অমর সৃষ্টি সীমাহীন সৌন্দর্য দীর্ঘকালিন হয়েছে। সেই কারণেই বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনী পৃথিবীর ইতিহাসে বহু মানুষের কাছে সবচেয়ে প্রিয় গ্রন্থ। কেননা ওর পরতে পরতে জীবনের আত্মত্যাগের কথা আছে।’ উপাচার্য আরো বলেন, ‘শিক্ষকদের দাবি দাওয়ার বিষয়গুলোকে মাঠ পর্যায় থেকে যতো বেশি টেবিলে আনা যাবে মূলত ততবেশি ফল পাওয়া যাবে। যতবেশি মাঠে আনবেন, ততবেশি সফলতার সম্ভাবনা কম হবে। গণতান্ত্রিক রীতি পদ্ধতিতে কখনো কখনো পেশার উৎকর্ষতায় নিজেকে আগে সফল দেখাতে হয়। আমরা যদি নিজেরা দক্ষ, যোগ্য হয়ে সফলতার স্বাক্ষর রাখতে পারি, আমি নিশ্চিত বাংলাদেশে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শিক্ষকদের মৌলিক দাবি-দাওয়ার বিষয়ে অত্যন্ত সজাগ এবং সচেতন। শিক্ষকদের মৌলিক দাবি-দাওয়াগুলো যতোক্ষণ অর্জিত না হয়, এটি এক ধরনের নিভৃতে কান্নার মতো। আমরা আশা করবো এই নিভৃত কান্নার অবসান হবে। বাংলার বুকে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন সত্যিকার অর্থে বাস্তবায়ন করতে হলে শিক্ষক এবং শিক্ষা হচ্ছে তার প্রধান বাহন।’ স্বাশিপের সভাপতি প্রফেসর ড. আবদুল মান্নান চৌধুরীর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি এমপি, বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী, ঢাকা-১৬ আসনের সংসদ সদস্য ইলিয়াস উদ্দিন মোল্লা প্রমুখ। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন স্বাশিপ সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ মো. শাহজাহান আলম সাজু প্রমুখ।
Discussion about this post