মানিকগঞ্জ প্রতিনিধ: মানিকগঞ্জের সিংগাইরে পাবজি খেলাকে কেন্দ্র করে এক স্কুলছাত্রকে কালীগঙ্গা নদীর তীরের কাশবনে নিয়ে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে। নিহত রাজু (১৪) উপজেলার সায়েস্তা ইউনিয়নের দক্ষিণ সাহরাইল গ্রামের মোসলেম উদ্দিনের ছেলে। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, মোবাইলে ফোনে পাবজি খেলা নিয়ে নিহত রাজু ও বন্ধু আলিফের (১৬) মধ্যে বিবাদের সৃষ্টি হয়। নিহতের বাবার মোসলেম উদ্দিনের অভিযোগ, উপজেলার দক্ষিণ সাহরাইলের রাজু কোরাইশির ছেলে আলিফ পাবজি গেম ও বিভিন্ন আইডি হ্যাক করতো। এটি রাজু সবাইকে জানিয়ে দেবে বলে জানায়। এর জেরে বৃহস্পতিবার (১৪ অক্টোবর) সন্ধ্যায় কৌশলে রাজুকে সাইকেলযোগে পার্শ্ববর্তী নবাবগঞ্জ উপজেলার শোল্লা ইউনিয়নের রুপারচর এলাকার কালীগঙ্গা নদীর তীরে কাশবনে নিয়ে যায়। সেখানে রাজুকে ইট দিয়ে মাথায় আঘাত করে। এরপর গায়ের জামা খুলে মুখে ভরে গলার ভেতরে ঢুকিয়ে দেয়। পরে মাথা ও মুখ থেঁতলে দেয়। এরপর দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। রাজু দক্ষিণ সাহরাইল কিন্ডার গার্টেনের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র। এদিকে, পরিবার রাজুকে খুঁজে না পেয়ে আলিফের বাড়িতে যায়। আলিফ ও তার পরিবার বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজি করে। ঘটনার দিন রাত ৯টার দিকে স্থানীয় কাঁচামালের ব্যবসায়ী নুরু মিয়া রুপারচর বাজার থেকে বাড়িতে যাওয়ার পথে কাশবন থেকে গোঙ্গানির শব্দ পান। সেখানে গিয়ে গুরুতর আহত অবস্থায় রাজুকে উদ্ধার করে সাহরাইল ইব্রাহিম মেমোরিয়াল হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে সাভারের এনাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শনিবার (১৬ অক্টোবর) ভোরে মারা যায়। ঘটনাকে কেন্দ্র করে শনিবার বেলা ১১টার দিকে নিহতের স্বজন ও গ্রামবাসীরা মিলে অভিযুক্ত আলিফের বাড়ি ঘেরাও করে এবং তাকে ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে কয়েক ঘণ্টার চেষ্টায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। অভিযুক্ত আলিফ ও তার বোন জামাইসহ তিন জনকে পুলিশ থানায় নিয়ে যায়। উত্তেজিত জনতা আলিফকে ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টাকালে বাধা দিলে পুলিশের ওপর ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করা হয়। এতে তিন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ গোলাম আজাদ জানান, উত্তেজিত জনতা আলিফের বাড়ি ঘেরাও করেছে- এমন খবর পেয়ে সকালের দিকে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করলে বিক্ষুব্ধ জনতা পুলিশের ওপর চড়াও হয়। এতে তিন পুলিশ আহত হন। এ ঘটনায় আলিফসহ তিনজনকে পুলিশ আটক করে সিংগাইর থানায় নিয়ে আসে। এ ঘটনায় আইনি ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।
Discussion about this post