স্টাফ রিপোর্টার: উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও টানা ভারী বর্ষণে দেশের উত্তরাঞ্চলের তিস্তা, ধরলা, দুধকুমার এবং ব্রহ্মপুত্রসহ একাধিক নদীর পানি দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। এতে এসব নদীর তীরবর্তী নিম্নাঞ্চল ও চর এলাকায় বন্যার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। ইতোমধ্যে তিস্তা নদীর পানি বিপদসীমার (৫২ দশমিক ১৫ সেমি) মাত্র ৭ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে, যা গত ২৪ ঘণ্টায় উল্লেখযোগ্যহারে বেড়েছে। বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) জানিয়েছে, রোববার (২০ জুলাই) সন্ধ্যা ৬টায় তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টে পানিপ্রবাহ ছিল ৫২ দশমিক ০৮ সেন্টিমিটার। আকস্মিক পানি বৃদ্ধিতে রংপুরের গঙ্গাচড়ার অন্তত সাতটি ইউনিয়নের নিচু চরাঞ্চলে পানি প্রবেশ করেছে। স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, পানি বাড়লেও সরকারিভাবে কোনো আগাম সতর্কতা বা প্রচারাভিযান শুরু হয়নি, ফলে নদীপাড়ের মানুষজন উৎকণ্ঠায় আছেন। গঙ্গাচড়ার চরাঞ্চলের বাসিন্দা একরামুল হক ও নয়া মিয়া জানান, সকাল থেকেই পানি বাড়ছে এবং রাতের মধ্যেই বন্যা হতে পারে বলে তারা চিন্তিত। কুড়িগ্রামের চরের বাসিন্দারাও কোনো সতর্কবার্তা না পাওয়ার কথা জানিয়েছেন। চর ভগবতীপুরের রশিদ আলী বলেন, “আজ রাইত থাকি নদীত পানি বাড়তেছে। কিন্তু কোনো সরকারি লোক দেখি নাই, মাইকও বাজে না।” পাউবোর বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী সরদার উদয় রায়হান জানিয়েছেন, আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তিস্তা নদী সংলগ্ন রংপুর, কুড়িগ্রাম, নীলফামারী ও লালমনিরহাটের নিম্নাঞ্চলে স্বল্পমেয়াদী বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে। ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, আসাম, অরুণাচল ও মেঘালয়ে ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে দেশের রংপুর ও সিলেট বিভাগে নদনদীর পানি বাড়ছে। কুড়িগ্রাম পাউবো সূত্র অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় ধরলায় ৪ সেমি, দুধকুমারে ১৮ সেমি, ব্রহ্মপুত্রে ২১ সেমি এবং তিস্তায় ১৪ সেমি পানি বেড়েছে। কুড়িগ্রাম জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো. আব্দুল মতিন জানিয়েছেন, সরকারিভাবে প্রস্তুতি থাকলেও এখনও আগাম প্রচারণা শুরু হয়নি এবং পরিস্থিতি বুঝে চরাঞ্চলে প্রচার চালানো হবে। এদিকে, কয়েক সপ্তাহ আগেও খরার কারণে নদীতে পানি না থাকায় ফসলের ক্ষতি হয়েছিল। এখন হঠাৎ পানি বাড়ায় পাকা ধান ও সবজির জমি ক্ষতির মুখে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন কুড়িগ্রামের চরাঞ্চলের কৃষকরা।
Discussion about this post