নওগাঁ প্রতিনিধি: নওগাঁর পত্নীতলায় কিশোরীকে অপহরণ করে ধর্ষণের ঘটনায় আব্দুস সালাম (৩৮) নামে এক আসামিকে সশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করেছে আদালত। একই সাথে তার ১ লাখ টাকা জরিমানা ও অনাদায়ে ৬ মাস বিনাশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করা হয়েছে।আজ রোববার বেলা ১১টায় নওগাঁর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিচারক জেলা ও দায়রা জজ মো. মেহেদী হাসান তালুকদার এ রায় প্রদান করেন।এ মামলার আরও তিন আসামিকে খালাস প্রদান করা হয়েছে। এ সময় আসামিরা আদালতে উপস্থিত ছিলেন।কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি আব্দুস সালাম নওগাঁ সদর থানার বর্ষাইল মধ্যপাড়া গ্রামের বাসীন্দা। খালাস প্রাপ্তরা হলেন- চয়েন আলী মুন্সি, আলমগীর হোসেন ও নাজমা খাতুন।মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, আসামি আব্দুস সালাম নওগাঁ সদর থানার বর্ষাইল মধ্যপাড়া গ্রামের বাসীন্দা। তিনি ভাঙ্গারির ব্যবসায়ি। ব্যবসার জন্য জেলার পত্নীতলা থানার কাদিয়াল বাজারের পাশে ভুক্তভোগীর বাড়ির পাশে ভাড়া থাকতেন। কিশোরী সপ্তম শ্রেণিতে মাদ্রাসায় পড়াশুনা করতো। মাদ্রাসায় আসা-যাওয়ার পথে বিভিন্নভাবে কুপ্রস্তাব দিতো এবং রাস্তা ঘাটে বিরক্ত করতো আব্দুস সালাম। বিষয়টি ছড়িয়ে পড়লে ভুক্তভোগীকে বিভিন্নভাবে ভয়ভীতি ও ভুমকি দেন আব্দুস সালাম।গত ২০২২ সালের ১১ জুলাই বিকেলে ভুক্তভোগী বাড়ি থেকে বাজারে যাওয়ার সময় বাজারের পশ্চিম পাশ থেকে আব্দুস সালাম সিএনজি (অটোরিকশা) যোগে কিশোরীকে অপহরণ করে। এরপর নওগাঁ সদর থানার ভবানীপুর দক্ষিনপাড়া গ্রামের মোজাফ্ফর রহমানের ভাড়া বাসায় আটক রেখে একাধিকবার ধর্ষণ করে। ঘটনায় কিশোরীর বাবা পত্নীতলা থানায় অভিযোগ করলে র্যাব অভিযান চালিয়ে ভাড়া বাসা থেকে আসামিকে গ্রেপ্তার ও মেয়েকে উদ্ধার করে। তদন্তকারী কর্মকর্তা তদন্ত শেষে ঘটনার সত্যতা থাকায় আসামি আব্দুস সালামসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। আদালত ১৭ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে আজ আসামিদের উপস্থিতিতে আব্দুস সালামকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড ও এক লাখ টাকা অর্থদণ্ড প্রদান করে। অনাদায়ে ৬ মাস বিনাশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করা হয়েছে।এছাড়া ৩ আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাদেরকে খালাস প্রদান করেন নওগাঁর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিচারক জেলা ও দায়রা জজ মো. মেহেদী হাসান তালুকদার।রাষ্ট্রপক্ষের সরকারি কৌশলি অ্যাডভোকেট রেজাউল করিম ও অ্যাডভোকেট আতিকুর রহমান বলেন, সন্দেহাতিতভাবে আসামি আব্দুস সালামের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণ করতে সক্ষম হয়। অপরাধ করলে পার পাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। অপরাধী যেই হোক না কেন তার সাজা হবে। রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন তারা।আসামি পক্ষের বিজ্ঞ কৌশলি ফাহমিদা কুলসুম উচ্চ আদালতে আপিল করার কথা জানান।
Discussion about this post