ঢাকা: সরবরাহে তেমন ঘাটতি না থাকলেও শুধুমাত্র আন্তর্জাতিক বাজারে বুকিং রেট বেড়ে যাওয়ায় গত দেড় বছরে প্রতি কেজি পাম অয়েলে ৭৪ টাকা, সুপার সয়াবিনে ৬৮ টাকা এবং সয়াবিনে ৬১ টাকা দাম বেড়েছে। অর্থাৎ পাইকারি পর্যায়ে ৬৫ টাকার পাম অয়েল ১৩৯ টাকা, ৭৫ টাকার সুপার সয়াবিন ১৪৩ টাকা এবং ৯০ টাকার সয়াবিন ১৫১ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।শ্রমিক সংকটের কারণে রপ্তানিকারক দেশগুলোতে উৎপাদন কম হওয়ায় বুকিং রেট লাগামহীন বলে দাবি ব্যবসায়ীদের।
গত বছরের পহেলা এপ্রিল করোনা সংক্রমণের শুরুতে পাইকারি পর্যায়ে প্রতি মণ সয়াবিন ৩ হাজার ৩০০ টাকা, পাম অয়েল ২ হাজার ৪০০ টাকা এবং সুপার সয়াবিন ২ হাজার ৭০০ টাকা দরে বিক্রি হলেও দেড় বছরে ভোজ্য তেলের দাম হয়েছে দ্বিগুণ। প্রকারভেদে প্রতি কেজি ভোজ্য তেলে ৬০ থেকে ৭৫ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। অথচ বাজারে ভোজ্য তেলের তেমন কোনো ঘাটতি ছিল না। চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জের মেসার্স আব্বাস সওদাগর ম্যানেজার জাফর আহমদ বলেন, করোনার শুরু থেকে এ পর্যন্ত গত দেড় বছরে পাম, সয়াবিন ও সুপার তেলে প্রতি কেজি ৬০ থেকে ৭০ টাকা বেড়েছে। তবে ব্যবসায়ীদের দাবি, ভোজ্য তেল উৎপাদনকারী ব্রাজিলসহ অন্যান্য দেশগুলোতে করোনার কারণে শ্রমিক সংকট ছিল মারাত্মক। এ কারণে উৎপাদন কম হওয়ায় বুকিং রেট লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়েছে।৬০০ মার্কিন ডলারের প্রতি মেট্রিক টন সয়াবিন এখন ১ হাজার ৩০০ মার্কিন ডলারে কিনতে হচ্ছে আমদানিকারকদের। সেই সঙ্গে ডলারের মূল্য বৃদ্ধি তো রয়েছেই। চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জের মেসার্স আর এন এন্টারপ্রাইজের মালিক আলমগীর পারভেজ জানান, মালয়েশিয়া এবং ইন্দোনেশিয়া থেকে যে পামওয়েলটা আসে ওটা ছিল ৫০০ থেকে ৫৫০ ডলার সেটা ১৮ মাস পরে ১ হাজার ২০০ থেকে ১ হাজার ২৫০ ডলারে দাঁড়িয়েছে এবং ব্রাজিল, আর্জেন্টিনা ও আমেরিকা থেকে যে সয়াবিন তেলটা আসে সেটা ৬০০ থেকে ১ হাজার ৩৫০ ডলার হয়ে গেছে। নানা অজুহাতে গত দেড় বছর ধরেই বাংলাদেশের ভোজ্য তেলের দাম লাগামহীন। সরকার একাধিকবার দর নির্ধারণ করেও দাম নিয়ন্ত্রণে আনতে পারছে না। সবশেষ চলতি বছরের ১৭ ফেব্রুয়ারি পাইকারি পর্যায়ে প্রতি লিটার সয়াবিন তেল ১১০ টাকা এবং পাম ও সুপার সয়াবিন ১০৪ টাকা দর নির্ধারণ করেছিল। বাজার তদারকিতে শিথিলতার কারণে মধ্যস্বত্ত্বভোগীরা দাম বাড়ানোর সুযোগ নিয়েছে বলে অভিযোগ ক্যাবের।
চট্টগ্রাম ক্যাবের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল বাহার সাবেরী বলেন, চাহিদা অনুযায়ী কে কতটা আমদানি করছেন, কতটুকু আমদানি করছেন, কী মূল্যে আমদানি করেছেন সেটার একটা ডেটাবেজ থাকা দরকার। আমদানিকারকদের মনিটরিং করতে হবে এবং প্রথম পর্যায়ের সরবরাহকারী তাদেরকে মনিটরিং করতে হবে। এমনকি পাইকারি ও খুচরা বিক্রেতাদেরও মনিটরিং করতে হবে। বছরে বাংলাদেশে ২২ থেকে ২৫ লাখ মেট্রিক টন ভোজ্য তেলের চাহিদা রয়েছে। যার পুরোটাই বিদেশ থেকে আমদানি করতে হয়।
Discussion about this post