ডেস্ক রিপোর্ট: ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র সাঈদ খাতিবজাদে বলেছেন, আফগানিস্তানে তালেবানের অন্তর্বর্তী সরকারের ক্ষমতা গ্রহণের অনুষ্ঠানে ইরান প্রতিনিধিদল পাঠাবে কিনা তা তালেবানের আচরণের ওপর নির্ভর করছে। ইরানের সংবাদ মাধ্যম পার্সটুডে জানায়, সোমবার (১৩ সেপ্টেম্বর) তেহরানে এক সংবাদ সম্মেলনে খাতিবজাদে এ কথা বলেছেন। এ সময় তালেবান সরকারের দায়িত্ব গ্রহণের অনুষ্ঠানে ইরান যোগ দেবে কিনা প্রশ্নের উত্তরে খাতিবজাদে বলেন, “বিষয়টি নিয়ে কথা বলার সময় এখনো আসেনি।” খাতিবজাদে বলেন, “আমরা তালেবানের স্থায়ী সরকার গঠনের অপেক্ষায় রয়েছি এবং এরপর অন্যান্য বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেব। তালেবানের আচরণ পর্যবেক্ষণ করার পরই কেবল আমরা তাদের অনুরোধ ও আমন্ত্রণে সাড়া দেয়ার বিষয়টি বিবেচনা করব।” এর আগে তালেবান যে অন্তর্বর্তী সরকার গঠন করেছে তাতে ইরান বা আন্তর্জাতিক সমাজের আকাঙ্ক্ষা প্রতিফলিত হয়নি বলে জানান খাতিবজাদে। তিনি বলেছিলেন, ইরান আফগানিস্তানে সকল পক্ষের উপস্থিতিতে একটি ‘অংশগ্রহণমূলক সরকার’ দেখতে চায়। এদিকে নতুন সরকারে সকল পক্ষের অংশগ্রহণ রাখবে বলে এর আগে প্রতিশ্রুতি দিলেও গত সপ্তাহে ঘোষিত সরকারে তালেবানের বাইরে কাউকে স্থান দেয়া হয়নি। এছাড়া তালেবানের পাঞ্জশির দখল ভাল ভাবে নেয়নি ইরান। এ বিষয়ে ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র সাঈদ খাতিবজাদে পাঞ্জশির উপত্যকায় তালেবানের হামলার কঠোর নিন্দা জানিয়ে বলেছিলেন, যুদ্ধ কখনো সংলাপের বিকল্প হতে পারে না। যে সমস্যার সমাধান সংলাপের মাধ্যমে সম্ভব তার সমাধানের জন্য রক্তপাত গ্রহণযোগ্য নয়। এদিকে ফ্রান্সের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জিন ইভেস লে ড্রিয়ান বলেছেন, তালেবানের নতুন সরকারের সঙ্গে ফ্রান্স কোনো সম্পর্কে যাবে না। মিথ্যা বলেছে তালেবানেরা। শনিবার কাতারের রাজধানী দোহায় আয়োজিত এক বৈঠকে অংশ নেওয়ার আগে ফ্রান্স ফাইভ টিভিতে লে ড্রিয়ান বলেন, তালেবানেরা বলেছিল তারা কিছু বিদেশি ও আফগানদের পুরোপুরি মুক্ত করে দেবে এবং তারা সরকারে সবার প্রতিনিধিত্ব করার কথা জানিয়েছিল। কিন্তু তারা সে কথা রাখেনি। মন্ত্রী বলেন, তালেবান সরকারকে ফ্রান্স স্বীকৃতি দেবে না এবং তাদের সরকারের সঙ্গে ফ্রান্সের কোনো সম্পর্ক নেই। আমরা তালেবানের কাছ থেকে কিছু উদ্যোগ দেখতে চাই। তাদের কিছু অর্থনৈতিক ব্যবস্থা ও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক তৈরির উদ্যোগ নিতে হবে। এসব তাদের ওপর নির্ভর করছে। গত ১৫ আগস্ট আফগান প্রেসিডেন্ট আশরাফ গনির পতনের পর দেশ দখল করে তালেবান। গত সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্র তাদের সদস্যদের পুরোপুরি প্রত্যাহার করে নেয়। এরমধ্যে দিয়ে আফগানিস্তানে যুক্তরাষ্ট্র ২০ বছরের আধিপত্য শেষ করেছে। গত ৬ সেপ্টেম্বর পুরো আফগানিস্তান দখলে নেওয়ার কথা জানায় তালেবান। আর ৭ সেপ্টেম্বর নিজ সদস্যদের নিয়ে অস্থায়ী সরকার গঠন করে সংস্থাটি।
Discussion about this post