বিনোদন ডেস্ক: ছোটপর্দার একজন জনপ্রিয় অভিনেতা ফারুক আহমেদ। প্রয়াত কথাসাহিত্যক ও নির্মাতা হুমায়ূন আহমেদের হাতে গড়া এই অভিনেতাকে বহু দর্শকপ্রিয় নাটকে দেখা গেছে। বিশেষ করে হুমায়ূন আহমেদের অসংখ্য নাটকে গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে অভিনয় করেছেন তিনি। দর্শক হাসাতে তিনি সিদ্ধহস্ত। আজ ২৫ মার্চ তার জন্মদিন। কিন্তু এই দিনে জন্মদিন পালন করেন না অভিনেতা ফারুক আহমেদ। কারণ, ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে পাকিস্তানের সামরিক বাহিনী ঢাকায় হামলা চালিয়ে অসংখ্য মানুষকে হত্যা করেছিল। শত শত ঘর-বাড়ি জালিয়ে দিয়েছিল। গ্রেপ্তার করেছিল স্বাধীন বাংলার মহান স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। সেই থেকে ২৫ মার্চকে বলা হয় কালরাত। দিনটি সারা দেশে পালিত হয় গণহত্যা দিবস হিসেবে। শহীদদের প্রতি সম্মান জানিয়ে এই দিনে জন্মদিন পালন থেকে বিরত থাকেন অভিনেতা ফারুক আহমেদ। বিষয়টি ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দিয়ে তিনি নিজেই জানিয়েছেন। শুক্রবার সকালে ফারুক তার ফেসবুকে লিখেছেন, ‘২৫ মার্চ গণহত্যা দিবস। আজ ২৫ মার্চ। আজ কালরাত্রি। আজ গণহত্যা দিবস। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চের এই রাতে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ঢাকা শহরে অতর্কিতে ঘুমন্ত জনগণের উপর আক্রমণ চালায়। হত্যা করে হাজার হাজার নিরীহ মানুষ। এ ইতিহাস সকলেরই জানা।’ অভিনেতা আরও লিখেছেন, ‘যে বিষয়টি মানুষ জানে না তা হলো, ২৫ মার্চ আমার জন্মদিন। হায়রে কপাল! ২৫ মার্চ কালরাত্রি আর গণহত্যা দিবসে আমার জন্মদিন। সকল শহীদদের প্রতি সম্মান জানিয়ে আমি গণহত্যা দিবসে আমার জন্মদিন পালন করা থেকে বিরত থাকি। সকলকে আমার ভালোবাসা ও শ্রদ্ধা।’ মানিকগঞ্জের ছেলে ফারুক আহমেদের অভিনয় জবিন শুরু ১৯৮৩ সালে। সে সময় তিনি ঢাকা থিয়েটারের সঙ্গে যুক্ত হন। সেখানে হুমায়ূন ফরীদি, আফজাল হোসেন, সুবর্ণা মুস্তাফা, শিমুল ইউসুফ, রাইসুল ইসলাম আসাদ, আহমেদ রুবেল ও লিটু আনামের মতো অভিনেতাদের সঙ্গে কাজ করেন। দীর্ঘ ২৪ বছর থিয়েটারের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন ফারুক আহমেদ। থিয়েটারে থাকাকালীন কীর্তনখোলা, প্রাচ্য, কেরামত মণ্ডল, চক্র ও যৈবতী কন্যার মতো নাটকে অভিনয়ের মাধ্যমে তিনি উল্লেখযোগ্যভাবে আলোচিত হন। ইমদাদুল হক মিলনের টিভি নাটক ‘বড় রকমের মানুষ’-এ রসিকলাল চরিত্রে অভিনয় করে তিনি প্রথম নজর কাড়েন। এর কিছুদিন পরই হুমায়ূন আহমেদের নজরে আসেন ফারুক আহমেদ। অভিনয় করেন তার পরিচালিত ‘অচিন বৃক্ষ’ নাটকে। সেই যে শুরু, এরপর হুমায়ূন আহমেদের র্মত্যুর আগ পর্যন্ত তার বেশির ভাগ নাটকেরই প্রিয় মুখ ছিলেন ফারুক আহমেদ। নাটকের পাশাপাশি ১৫টির মতো চলচ্চিত্রেও সুনামের সঙ্গে অভিনয় করেছেন তিনি। অভিনয়ের বাইরে ফারুক আহমেদ লেখালেখিও করেন। ‘কাল সাপের দংশন’, ‘উচ্চ বংশ পাত্র চাই’, ‘ডিগবাজি’, ‘দুই বাসিন্দা’ ও ‘পানি পড়া’সহ বেশ কিছু নাটকের চিত্রনাট্য লিখেছেন এই অভিনেতা। এছাড়া ‘বদরাগী বদরুল’ ও ‘হাউ মাউ খাও’ নামে দুটি নাটক তিনি পরিচালনাও করেছেন।
Discussion about this post