আন্তর্জাতিক ডেস্ক: চলতি বছরে হজে করোনার কঠোর বিধিনিষেধ রাখবে না সৌদি সরকার। কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, করোনাভাইরাস উদ্বেগের ফলে বার্ষিক এই ধর্মীয় জমায়েতে মুসলিমদের অংশগ্রহণে বিধিনিষেধ আরোপণ করা হয়েছিল। কিন্তু এ বছর মহামারি পূর্ব সময়ের মতোই হজ অনুষ্ঠিত হবে। ইসলাম ধর্মের অনুসারিদের মধ্যে যারা শারিরীক এবং আর্থিকভাবে সক্ষম তাদের জন্য হজ একটি আবশ্যকিয় ইবাদত। প্রতি বছরের হজ পালন করতে সমগ্র বিশ্বের লাখ লাখ ধর্মপ্রাণ মুসলমান সৌদি আরবের পবিত্র মক্কা নগরিতে হজ পালনের উদ্দেশে জমায়েত হয় যা বিশ্বের বৃহত্তম জমায়েত হিসেবে স্বীকৃত। সৌদি আরবের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা জানিয়েছে, দেশটির হজ ও ওমরাহ মন্ত্রী তৌফিক বিন ফাওজান আল-রাবিয়া সোমবার সন্ধ্যায় বলেছেন, ‘আমি এই বৈঠকে আপনার জন্য দুটি সুসংবাদ নিয়ে এসেছি। প্রথমটি, এবারের হজে বয়সের কোনো সীমাবদ্ধতা থাকবে না। মহামারীর পূর্বে যে নিয়মে হজ পালিত হতো এবারও তাই হবে। দ্বিতীয়টি হলো- বিশ্বজুড়ে যে কোনও হজ মিশনে সেই সমস্ত দেশের হজযাত্রীদের প্রয়োজনীয়তা পূরণ করে এমন কোনও লাইসেন্সপ্রাপ্ত এজেন্সির মাধ্যমে সকলেই হজ পালনের জন্য আসতে পারবেন।’ ২০১৯ সালে ২০ লাখ ৪০ হাজারের বেশি মানুষ হজ পালন করতে এসেছিল। তবে পরের বছর, ২০২০ সালে মহামারি এবং লকডাউনের কারণে ১ হাজার জনের কম ব্যক্তিদের হজ পালনের অনুমতি দিয়েছিল যা মারাত্মক হ্রাস। এর আগে ১৯১৮ সালের ফ্লৃ মহামারির সময়েও এ ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছিল। ২০২১ সালে সৌদি আরবের প্রায় ৬০ হাজার বাসিন্দা হজ পালন করেছিলেন। এর বাইরে বিশ্বব্যাপী প্রায় ৯ লাখ মুসল্লি হজ পালনের সুযোগ পেয়েছিলেন। তবে এর মধ্যে ৬৫ বছরের কম বয়সী এবং যাদের করোনা ভ্যাকসিন নেওয়া ছিল পাশাপাশি কোভিড নেগেটিভ সনদ যাদের ছিল তারাই হজে অংশ নেওয়ার অনুমতি পেয়েছিল। হজকে ঘিরে রোগের প্রাদুর্ভাব সবসময়ই উদ্বেগের বিষয়। হজযাত্রীরা ৬৩২ সালে ম্যালেরিয়ার প্রাদুর্ভাবের বিরুদ্ধে লড়াই করেছিল, ১৮২১ সালে কলেরায় আনুমানিক ২০ হাজার মানুষ মারা গিয়েছিল এবং ১৮৬৫ সালে আরেকবার কলেরা বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়ায় প্রায় ১৫ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছিল। চলতি বছর হজে সৌদি কর্তৃপক্ষ স্বাস্থ্য বিষয়ক কি কি পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানা যায়নি। যদিও সৌদি আরবে করোনভাইরাস ভ্যাকসিন বা পরীক্ষার জন্য কোনও প্রয়োজন নেই, তবে হজযাত্রীদের অন্যান্য রোগের জন্য টিকা দিতে হবে। তেল সমৃদ্ধ সৌদি আরবের অর্থনীতির জন্য প্রতি বছর হজ আয়োজন অনেক গুরত্বপূর্ণ। এটি দেশটির অন্যতম প্রধান অর্থনীতিও বলা যায়। হজ থেকেই প্রতিবছর বিলিয়ন ডলার রাজস্ব পায় সরকার।
Discussion about this post