ঢাকা: গণপরিবহন ছাড়াও যে জনসভা সফল করা যায় বিএনপি সেটা প্রমাণ করেছে বলে মন্তব্য করেছেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী। তিনি বলেছেন, গণপরিবহন বন্ধ করে বাধা সৃষ্টি করলেও বিএনপির সমাবেশে লাখ লাখ মানুষ হয়েছে। আজ রাজধানীতে বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে গণপরিবহনের তীব্র সংকট সৃষ্টি হয়েছে জানিয়ে তিনি এসব কথা বলেন। দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে, আবদুস সালাম মিলনায়তনে’ বিপ্লব ও সংহতি’ দিবস উপলক্ষে জাতীয়তাবাদী তাঁতিদল আয়োজিত আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন আমির খসরু মাহমুদ। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য বলেন, বাংলাদেশের জনসাধারণের জন্য আজকে বাস আছে বলে মনে হয় না। সব পরিবহন তাদের দখলে। বিআরটিসি যুবলীগের ব্যানার নিয়ে ভাড়ায় দেয়া হচ্ছে। এর চেয়ে লজ্জার আর কিছু হতে পারে না। তিনি বলেন, চারিদিকে রাস্তাঘাট বন্ধ। খুব কষ্ট করে প্রোগ্রামে আসতে হয়েছে। মনে হচ্ছে এটা কোনো রাষ্ট্রীয় প্রোগ্রাম এটা দলের কোনো প্রোগ্রাম মনে হচ্ছে না। বিদেশিদের কেউ যদি দেখে তারা এটাকে রাষ্ট্রীয় প্রোগ্রাম মনে করবে। দলের প্রোগ্রাম মনে করবে না। খসরু বলেন, গণপরিবহন ছাড়াও যে জনসভা করা যায় সেটা প্রমাণ করেছে বিএনপি। এই আন্দোলন থেকে বিএনপির লাভ হয়েছে। পরিবহন ছাড়াও কর্মসূচিতে লাখ লাখ মানুষের সমাগম হয়েছে। সবকিছু বন্ধ করে দিয়ে খাবার বন্ধ করে দিয়েও যে কর্মসূচি বন্ধ করা যায় না। এটাকে আন্দোলন বলে না এটাকে বিপ্লব বলে। আন্দোলনে মানুষ নদী ঝাঁপিয়ে আসে না। বিপ্লবে আসে। বাংলাদেশে ৪২ শতাংশ মানুষ দারিদ্রসীমার নিচে বসবাস করছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, মানুষ আজ দুই বেলা খেতে পারছে না। দ্রব্যমূল্যের চাপে মানুষ দিশেহারা। বিদ্যুতের অভাবে অন্ধকারে। ভয়ভীতি দেখিয়ে মানুষকে দমানোর চেষ্টা হচ্ছে। খসরু বলেন, বিএনপি তার অবস্থান পরিষ্কার করেছে। নির্বাচনী খেলা- এই সরকারের অধীনে নির্বাচনে যাওয়া যাবে না, এই ব্যাপারে কোন সন্দেহের অবকাশ নাই। মানুষকে যদি ভোটাধিকার ফিরে পেতে হয় তাহলে এই সরকারের অধীনে কোন নির্বাচন নয়। শুধু যাবোই না। তাদেরকে আন্দোলনের মাধ্যমে অপসারণ করতে হবে। এই বিষয়টা পরিষ্কার করতে হবে। একমাত্র মুক্তির পথ আন্দোলনের মাধ্যমে ফয়সালা করতে হবে। এদের পতন ঘটাতে হবে। পরবর্তীতে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন হবে। এইটা যখন জনগনের কাছে পরিষ্কার হয়েছে। তখন মানুষ সিদ্ধান্ত নিয়েছে আর পিছু হটবে না। তিনি বলেন, আন্দোলনের পরবর্তী সময় নিয়ে অনেকের মধ্যে উদ্বেগ উৎকণ্ঠা রয়েছে। দেশকে উদ্ধার করার জন্য, দেশকে মেরামত করার জন্য বিএনপির কি চিন্তা। শেখ হাসিনা যাওয়ার পরবর্তীতে কী হবে সে বিষয়ে তারেক রহমান দিক-নির্দেশনা দিয়েছে। যারা আন্দোলনরত, যে শক্তিগুলো থাকবে তাদের সবাইকে নিয়ে জাতীয় সরকার গঠন করা হবে। কোন সংশয় যেন না থাকে। জাতীয় সরকার কী কী বিষয়ে সংস্কার করবে সে বিষয়েও পরিস্কার করা হবে। জাতির সামনে। বিএনপির সঙ্গে যারা যুগপৎ আন্দোলন করবে ফ্যাস্টিট সরকারের পতনের, জন্য সবাইকে নিয়েই গঠন হবে জাতীয় সরকার। খসরু বলেন, ছোটোখটো পরিবর্তন দিয়ে এই জাতিকে বাঁচানো যাবেনা। আন্দোলন নিয়ে মানুষের সামনে পরিস্কার চিত্র তুলে ধরতে হবে। সংবিধানকে ধ্বংস করে দিয়েছে। ক্ষত বিক্ষত করে ফেলেছে। এই সংবিধানে কী কী পরিবর্তন আনতে হবে সেটাও পরিস্কার করা হবে জাতির সামনে। বিচার বিভাগকে দলীয় করণ করে এমন জায়গায় নিয়ে গেছে যে দেশে কোনো আইনের শাসন নাই। বিশ্ববিদ্যালয়কে এমন পর্যায়ে নিয়ে গেছে যে শিক্ষাঙ্গনে শিক্ষার পরিবেশ নাই। নির্বাচনী ব্যবস্থাকে ধ্বংক করে দেওয়া হয়েছে। এই সব ব্যবস্থা আবার সংস্কার করতে হবে। বিএনপির এ নেতা আরও বলেন, ভোট চুরিতে যারা সহায়তা করেছে তাদের বিচার হবে। যারা দেশের টাকা বিদেশে পাচার করেছে তাদের বিচার হবে। যারা গুম-খুন হত্যার সাথে জড়িত তাদের বিচার হবে। যারা মানুষকে মিথ্যা মামলা দিয়ে জেলে পুরে হয়রানি করেছে তাদের বিচার হবে। যারা আগুন সন্ত্রাস করেছে কারা জড়িত সব বিচার হবে। সুতরাং বাংলাদেশ আগামী দিনে পরিচ্ছন্ন বাংলাদেশ হবে। জাতীয়তাবাদী তাঁতি দলের আহ্বায়ক আবুল কালাম আজাদের সভাপতিত্বে এবং সদস্য সচিব মজিবুর রহমানের সঞ্চালনায় সভায় বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নুল আবেদিন ফারুক, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরফত আলী সপু, সাবেক সংসদ সদস্য নিলোফার চৌধুরী মনি প্রমুখ বক্তৃতা করেন।
Discussion about this post