ঢাকা: বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তির মেয়াদ আরও ছয় মাস বাড়ানোর জন্য মত দিয়েছে আইন মন্ত্রণালয়। সরকারের নির্বাহী আদেশে মুক্তি পাওয়া সাবেক এ প্রধানমন্ত্রীর সাজা স্থগিতের মেয়াদ ২৪ সেপ্টেম্বর শেষ হবে। ইতোমধ্যে তার স্থায়ী মুক্তির জন্য পরিবারের পক্ষ থেকে সরকারের কাছে আবেদন করা হয়েছে। এ প্রসঙ্গে শনিবার আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, তার (খালেদা জিয়া) সাজা আরও ছয় মাসের জন্য স্থগিত করার পক্ষে আইন মন্ত্রণালয় থেকে মত দেয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদনের জন্য আমাদের মতসহ প্রস্তাব স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছি। এখন চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানাবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। আইন মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, খালেদা জিয়ার পরিবারের পক্ষ থেকে সরকারের কাছে যে আবেদন করা হয় সেটিতে স্থায়ীভাবে তার মুক্তি চাওয়া হয়েছিল। কিন্তু আইন মন্ত্রণালয় সেটি বিবেচনা করেনি। বিদেশে যেতে পারবেন না এবং বাসায় থেকে চিকিৎসা নিতে হবে- পূর্বের দেয়া এ দুটি শর্ত বহাল রাখা হয়েছে। গত বছর মার্চে খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য তার পরিবার থেকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে আবেদন করা হয়েছিল। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে ফৌজদারি কার্যবিধির ৪০১(১) ধারায় তার (খালেদা জিয়া) দণ্ডাদেশ স্থগিত করে তাকে ছয় মাসের জন্য মুক্তি দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়। গত বছর ২৫ মার্চ সেই আদেশে তিনি (খালেদা জিয়া) মুক্তি পান। এরপর পরিবারের আবেদনের প্রেক্ষিতে আরও দুদফা তার মুক্তির মেয়াদ বাড়ানো হয়। সবশেষ গত সপ্তাহে তার স্থায়ী মুক্তি চেয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেন খালেদা জিয়ার ভাই শামীম এস্কান্দার। আবেদনটি মতামতের জন্য পাঠানো হয় আইন মন্ত্রণালয়ে। সেখান থেকে মত দিয়ে তা মঙ্গলবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অনুমোদনের পর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বর্তমানে রাষ্ট্রীয় সফরে দেশের বাইরে রয়েছেন। কয়েক দিনের মধ্যে তার দেশে ফেরার কথা রয়েছে। তিনি ফিরলে এ ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। মুক্তি পাওয়ার পর খালেদা জিয়া গুলশানে তার ভাড়া বাসা ‘ফিরোজা’য় রয়েছেন। তিনি আর্থারাইটিস, ডায়াবেটিস, চোখের সমস্যাসহ বার্ধক্যজনিত নানা সমস্যায় ভুগছেন। এর মধ্যে ১১ এপ্রিল করোনায় আক্রান্ত হন তিনি। শারীরিক দুর্বলতার কারণে ২৭ এপ্রিল তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ৫৩ দিন চিকিৎসা শেষে বাসায় ফেরেন তিনি। ইতোমধ্যে করোনার দুই ডোজ টিকাও নিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন। ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলার সাজায় কারাজীবন শুরু হয় খালেদা জিয়ার। পরে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায়ও তার সাজা হয়। এছাড়া তার বিরুদ্ধে আরও ৩৪টি মামলা রয়েছে। দীর্ঘ দুবছর কারাভোগের পর সরকারের নির্বাহী আদেশে মুক্তি পান তিনি।
Discussion about this post