ঢাকা: কোনো প্রতিবন্ধকতা যেন বাংলাদেশের অগ্রযাত্রায় বাধা না হয়ে দাঁড়ায় বলে সতর্ক করছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মঙ্গলবার (৩ জানুয়ারি) পুলিশ সপ্তাহ-২০২৩ উপলক্ষ্যে রাজারবাগ পুলিশ প্যারেড মাঠে ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তাদের উদ্দেশে দেয়া ভাষণে এ কথা বলেন তিনি। শেখ হাসিনা বলেন, অনেক চক্রান্ত হয়েছে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে। বাংলাদেশ কখনও ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত হতে পারে না। কোনো প্রতিবন্ধকতা যেন অগ্রযাত্রায় বাধা না হয়ে দাঁড়ায়, মন্দার ধাক্কা যেন না আসে, সেদিকে আমাদের লক্ষ্য রাখতে হবে। তিনি বলেন, জঙ্গিবাদের হাত থেকে আমরা দেশকে রক্ষা করেছি। জঙ্গি, সন্ত্রাস ও মাদক প্রতিরোধেও পুলিশ ভূমিকা রাখছে। জনগণের পুলিশ হিসেবেই জনগণের সেবা দিচ্ছে পুলিশ। পুলিশের ওপর জনগণের যে আস্থা তৈরি হয়েছে, সেটা ধরে রাখতে হবে এছাড়া সরকারের দায়িত্ব পালনে তিন মেয়াদে দেশকে অর্থনৈতিকভাবে শক্তিশালী করার পাশাপাশি পুলিশের আধুনিকায়নেও ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, পুলিশকে আরো গতিশীল করতে একে ত্রিমাত্রিক বাহিনীতে রূপ দেয়ার প্রক্রিয়া চলছে। মনুষ্যসৃষ্ট দুর্যোগ প্রতিরোধে ভূমিকা রাখছে পুলিশ। ২০১৩-১৪ সালে অগ্নিসন্ত্রাসে পুলিশও রেহাই পায়নি। নির্দয়ভাবে পুলিশকে হত্যা করেছে বিএনপি-জামায়াত। জীবনবাজি রেখে ধ্বংসাত্মক কাজ প্রতিরোধ করে মানুষের জানমাল রক্ষায় ভূমিকা রাখে পুলিশ সদস্যরা। এমন ধ্বংসাত্মক পরিস্থিতি বাংলাদেশে যেন আর না ঘটে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, পুলিশ সব সময় মানুষের পাশে আছে। যে কোনো দুর্যোগেই পুলিশ পাশে থাকে। পাশাপাশি মনুষ্যসৃষ্ট দুর্যোগেও পুলিশ ভূমিকা রাখে। মানুষের জানমাল বাঁচাবার জন্য নিজের জীবনকেও উৎসর্গ করে। যেকোনো ঝুঁকি নিতে পিছপা হয় না। এটাই হচ্ছে পুলিশের বড় কাজ যা পুলিশ দক্ষতার সঙ্গে করে যাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০১৩, ২০১৪ ও ২০১৫ সালে তাণ্ডব-অগ্নিসন্ত্রাসের ফলে প্রায় সাড়ে তিন হাজারের মতো মানুষ অগ্নিদগ্ধ হয়েছিল। ৫০০ মানুষ মৃত্যুবরণ করে অগ্নি সন্ত্রাসের কারণে, যেখানে ২৯ জন পুলিশ সদস্য নিহত হয় দগ্ধ হয়ে, আহত হয় আরও অনেকে। প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, এই বিএনপি, জামায়াত-শিবিররা যেভাবে হত্যা করেছে প্রকাশ্যে দিবালোকে, এভাবে পুলিশের গায়ে কখনো কেউ হাত দেয়! তা কখনো দেখা যায় না। যদিও তা বাংলাদেশে ঘটেছে। এছাড়া সাড়ে ৩ হাজার বাস-ট্রাক, ১৯টি ট্রেন, ১১টি লঞ্চ পুড়িয়ে ধ্বংস করে। ৭০টি সরকারি ও ৬ ভূমি অফিস পুড়িয়ে দেয়। সে সময় পুলিশের সদস্যরা জীবন বাজি রেখে এই রকম ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ডকে রুখে দিয়ে জনগণের নিরাপত্তা দিয়েছেন। দুর্ভাগ্য হলো, অনেক পুলিশ সদস্য আগুনে দগ্ধ হয়ে বেঁচে আছেন, কিন্তু কারো চেহারা এতো বিকৃত হয়েছে যে তারা মানুষের সামনে যেতে পারেন না। বাংলাদেশে এ ধরনের অগ্নিসন্ত্রাসের ঘটনা যেন আর না ঘটে।
Discussion about this post