ঢাকা: কাটাছেঁড়া করে সাজানো একটি সংবিধানে আওয়ামী লীগের তামাশার নির্বাচন বিএনপি হতে দেবে না বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। শনিবার (৪ মার্চ) বিকালে রাজধানীর উত্তরায় বিএনপির এক পদযাত্রার পর্বে এক সমাবেশে সরকারের প্রতি এ হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন দলটির মহাসচিব। বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘সরকারের মন্ত্রীরা বলেন, বর্তমান সংবিধানের অধীনে নির্বাচন হবে। কোন সংবিধান? যে সংবিধান কাটাছেঁড়া করে একটি পাতানো নির্বাচনের জন্য সাজিয়ে নিয়েছে আওয়ামী লীগ? যে নির্বাচনে ভোট দিতে যায় না মানুষ।’ ‘এর আগের নির্বাচনে ভোট কেন্দ্রে কুকুর শুয়েছিল। এ ছবি মিডিয়ায় প্রচার হয়েছে। এ দেখে আমাদের এক নেতা বলেছিলেন কুত্তামার্কা নির্বাচন। আবারও পাতানো-সাজানো নির্বাচনের আয়োজন চলছে।’ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অধীনে হলে নির্বাচন নিরপেক্ষ হবে না মন্তব্য করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এইবার তামাশার নির্বাচন, আওয়ামী লীগের নির্বাচন হতে দেয়া হবে না। এজন্য শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন হচ্ছে।’ বিএনপির চলমান এই আন্দোলনকে সামনের দিকে দিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান দলটির মহাসচিব। মির্জা ফখরুল বলেন, ‘১৫ বছর ধরে আন্দোলনে আছি। আমরা আন্দোলনে থাকব। তাতে বাধা দিলে আমরা তা অতিক্রম করে যাব।’ মির্জা ফখরুল বর্তমান সরকার দেশের মানুষের সমস্যার সমাধান করতে পারছে না বলে অভিযোগ করেন। বলেন, ‘কয়েক মাসে তিনবার বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হয়েছে। এতে জিনিষপত্রের দাম আরেক দফা বেড়েছে। গ্যাসের দাম বাড়িয়েছে। এজন্য কলকারাখানা চালু রাখতে সমস্যা হচ্ছে।’ মির্জা ফখরুল দাবি করেন, ‘ভারতের আদানি গোষ্ঠীর সঙ্গে চুক্তি করেছে সরকার। কয়লা কিনবে, বিদ্যুৎ কিনবে। তারা বিদ্যুৎ না দিলেও খরচ দিতে হবে সরকারকে। এতে সরকারকে এক লাখ ডলালের বেশি খেসারত দিতে হবে।’ বর্তমান সরকারের জনগণের প্রতি কোনো দায়বদ্ধতা নেই বলেও মন্তব্য করেন বিএনপি মহাসচিব। তিনি কিছুদিন আগে বৃত্তি পরীক্ষার ফল কেলেঙ্কারি ও ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রী নির্যাতনের ঘটনার কথা উল্লেখ করেন। সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন উত্তরা-পর্ব থানা বিএনপির আহ্বায়ক শাহ আলম। এতে বক্তব্য দেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য ও ঢাকা মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক আমানউল্লাহ আমান, জয়নুল আবদিন ফারুক, ছাত্রবিষয়ক সম্পাদক রকিবুল ইসলাম বকুল, কৃষক দলের সভাপতি হাসান জাফির তুহিন ও ছাত্রদল সভাপতি কাজী রওনাকুল ইসলাম শ্রাবণ প্রমুখ।
নতুন কর্মসূচি: আগামী ১১মার্চ দেশের সব মহানগর ও জেলায় যুগপৎ আন্দোলনের অংশ হিসেবে নতুন কর্মসূচি হিসেবে মানববন্ধন ঘোষণা করেন বিএনপি মহাসচিব। সরকারের পদত্যাগসহ ১০ দফার দাবির সঙ্গে গ্যাস-বিদ্যুৎসহ নিত্যপণ্যের দাম বৃদ্ধির প্রতিবাদে এই কর্মূসুচি ঘোষণা করা হয়। নতুন কর্মসূচি হচ্ছে যুগপৎ আন্দোলনের দশম কর্মসূচি। ২০২২ সালের ডিসেম্বর থেকে গণমিছিল, গণঅবস্থান, বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিল এবং পদযাত্রা কর্মসুচির মাধ্যমে যুগপৎ আন্দোলন করে আসছে বিএনপির নেতৃত্বাধীন সরকারবিরোধীরা। ঢাকায় আরও ৪৯টি স্থানে বিএনপির পদযাত্রার কর্মসূচি হয়। এতে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য, ভাইস চেয়ারম্যান, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্যসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ অংশ নেন। ঢাকার বাইরে অন্য মহানগরগুলোর থানা পর্যায়ের এ পদযাত্রায় দলের স্থায়ী কমিটির সদস্যসহ কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত থেকে নেতৃত্ব দেন।
Discussion about this post