ঢাকা: কক্সবাজারে আজ রোববার (২৪ আগস্ট) রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে তিন দিনব্যাপী অংশীজনদের নিয়ে সংলাপ শুরু হচ্ছে। আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্কে রোহিঙ্গা পরিস্থিতির ব্যাপারে উচ্চ পর্যায়ের সম্মেলনের আগে কার্যকর সুপারিশ প্রণয়নে এই সংলাপের আয়োজন করা হয়েছে। নিউইয়র্কের সম্মেলনটি ৮০তম জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের সাইডলাইনে অনুষ্ঠিত হবে।রোহিঙ্গা ইস্যুতে উচ্চ প্রতিনিধির কার্যালয় এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের যৌথ উদ্যোগে ‘অংশীজন সংলাপ: রোহিঙ্গা পরিস্থিতির ওপর উচ্চ-স্তরের সম্মেলনের সমাপ্তি’ শীর্ষক আয়োজনটি ২৪ থেকে ২৬ আগস্ট অনুষ্ঠিত হবে। সেখানে ১০ লক্ষাধিক রোহিঙ্গা শরণার্থী আশ্রয় নিয়ে আছে।পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস আগামী ২৫ আগস্ট সংলাপে প্রধান অতিথি হিসেবে যোগ দেবেন।সংলাপে দেশ-বিদেশের কূটনীতিক, আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞ, রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি, আন্তর্জাতিক সংস্থা ও শিক্ষাবিদসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশগ্রহণ করবেন।আয়োজকরা জানান, রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের পুরুষ, নারী ও যুবকদের কথা গুরুত্ব সহকারে শোনার ওপর জোর দেওয়া হবে, যেন আন্তর্জাতিক মহল তাদের আকাঙ্ক্ষা, অভিযোগ ও ভবিষ্যত প্রত্যাশাগুলো সরাসরি জানতে পারে।সংলাপে বিষয়ভিত্তিক পাঁচটি অধিবেশন থাকবে। সেগুলো হলো, মানবিক সহায়তা ও তহবিলের চ্যালেঞ্জ, মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের বর্তমান উন্নয়ন, প্রত্যাবাসনের জন্য আত্মবিশ্বাস তৈরির ব্যবস্থা, নৃশংসতার জন্য ন্যায়বিচার ও জবাবদিহিতা, টেকসই ও সময়সীমাবদ্ধ সমাধানের জন্য দীর্ঘমেয়াদি কৌশল।আগামী ২৬ আগস্ট অংশীজনরা রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবির পরিদর্শন করবেন এবং শরণার্থীদের চ্যালেঞ্জ সম্পর্কে সরাসরি ধারণা পাবেন।পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, সংলাপের লক্ষ্য হলো, নিউইয়র্কে আসন্ন উচ্চ পর্যায়ের সম্মেলনের জন্য সুনির্দিষ্ট ও কার্যকর সুপারিশ প্রণয়ন করা।আগামী ৩০ সেপ্টেম্বরের সম্মেলনে প্রায় ১৭০টি দেশের প্রতিনিধি অংশ নেবেন বলে আশা করা হচ্ছে। সেখানে মিয়ানমারের রোহিঙ্গা ও অন্যান্য নির্যাতিত সংখ্যালঘুদের চলমান দুর্দশা সমাধানের ওপর আলোকপাত করা হবে।সরকারি কর্মকর্তারা জানান, ২০১৭ সালে মিয়ানমারে গণহত্যা থেকে বাঁচতে পালিয়ে বাংলাদেশে আসার আট বছর পর এবং মিয়ানমারে ক্রমবর্ধমান সহিংসতা ও রোহিঙ্গাদের জন্য আন্তর্জাতিক তহবিল হ্রাসের মধ্যে কক্সবাজারে এই অংশীজন সংলাপ বিশেষভাবে সময়োপযোগী।এর আগে বক্তব্য রাখতে গিয়ে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন তিনটি গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রচেষ্টার কথা তুলে ধরেন। সেগুলো হলো- নিরবচ্ছিন্ন বৈদেশিক সাহায্য অব্যাহত রাখা, আন্তর্জাতিক মহলে আলোচনায় রোহিঙ্গা সংকট দৃশ্যমান রাখা এবং রোহিঙ্গাদের তাদের মাতৃভূমিতে নিরাপদ, স্বেচ্ছায় ও মর্যাদাপূর্ণভাবে প্রত্যাবর্তনকে সহজ করা।তিনি বলেন, ‘বিষয়টি ভুলে যাওয়া উচিত নয়। আমরা এটিকে আলোচনায় নিয়ে আসার জোর প্রচেষ্টা চালাচ্ছি।’ দীর্ঘস্থায়ী সংকট থেকে মানবিক, উন্নয়নমূলক ও নিরাপদ উত্তরণের ব্যাপারে গুরুত্বারোপ করেন তিনি।
Discussion about this post