সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি: উত্তরবঙ্গের প্রবেশদ্বার যমুনা বিধৌত সিরাজগঞ্জে উদ্বোধনের অপেক্ষায় শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজের হাসপাতাল। অত্যাধুনিক চিকিৎসার সুযোগ-সুবিধা সম্বলিত ৫০০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল ও মেডিকেল কলেজ এটি। উত্তরবঙ্গের সব শ্রেণি-পেশার মানুষের চিকিৎসার ভরসাস্থল হতে পারে এ হাসপাতাল। এখানে রয়েছে জটিল ও কঠিন রোগের প্রয়োজনীয় চিকিৎসা ব্যবস্থা। রয়েছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের নামকরা ব্রান্ডের চিকিৎসা সরঞ্জামাদি। ২০১৫ সালে আটশ ৮২ কোটি ৫০ লাখ টাকা ব্যয়ে ৩০ দশমিক ৯০ একর জায়গার ওপর শহরের পাশেই শিয়ালকোল এলাকায় শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ ও পাঁচশ শয্যার হাসপাতাল নির্মাণকাজ শুরু হয়। অত্যাধুনিক ও উন্নতমানের চিকিৎসা দিতে হাসপাতালটিতে স্থাপন করা হয়েছে সিটিস্ক্যান, নিউরো সার্জারি মেশিন, ফুসফুসের অপারেশন থিয়েটার, বিনা অপারেশনে কিডনির পাথর অপসারণের জন্য লিথোপেসি মেশিন, অর্থপেডিক্স অপারেশনের জন্য সিআম এক্সরে মেশিন, ব্রেস্ট ক্যান্সার চিহ্নিত করার জন্য মেমোগ্রাফি মেশিন, চক্ষু রোগীদের জন্য লেসিক অপারেশন থিয়েটার, অপারেশনের আগে যন্ত্রপাতি জীবানুমুক্ত করতে স্টেলাইজেশন মেশিন, অত্যাধুনিক ব্ল্যাড ব্যাংকের ব্যবস্থা। আনা হয়েছে উন্নতমানের ব্লাড কালেকশন চেয়ার। বসানো হয়েছে রক্তের গ্লুকোজসহ সবধরনের রক্ত পরীক্ষার জন্য অটোমেটেড বায়োকেমেস্ট্রি এনালিজার, অটোমেটেড হেমোটোলজি এনালাইজার মেশিন এবং হার্টের অপারেশন ও রিং পরানোর জন্য বসানো হয়েছে এনজিওগ্রাম। শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ ও ৫০০ শয্যার হাসপাতালের প্রকল্প পরিচালক কৃষ্ণ চন্দ্র পাল বলেন, ‘নির্মাণ শুরু থেকেই আমি দায়িত্ব পালন করে আসছি। নির্মাণ কাজ তদারকি থেকে শুরু করে প্রয়োজনীয় সবকিছু স্থাপন সম্পন্ন করতে দীর্ঘ চার বছর ধরে কাজ করছি। হাসপাতালের চিকিৎসা সরঞ্জামাদি জার্মানি, কানাডা, ভারত, কোরিয়া, জাপান, ইউকে, ইউএসএ, পাকিস্তান, চীন, দক্ষিণ কোরিয়াসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে নামকরা ব্রান্ডের শতভাগ চিকিৎসা সরঞ্জামাদি আনা হয়েছে।’ ‘বড় মেশিনগুলো ইতোমধ্যেই স্থাপন করা হয়েছে। গুণগতমানের ক্ষেত্রে কোন ছাড় দেয়া হয়নি।’ যোগ করেন কৃষ্ণ চন্দ্র পাল। এক প্রশ্নের জবাবে প্রকল্প পরিচালক আরও বলেন, ‘এখানকার প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সরঞ্জামাদি কেনা হয়েছে সম্পূর্ণ ইজিবির মাধ্যমে। এই প্রক্রিয়ায় কোনো নির্দিষ্ট ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে কাজ পাইয়ে দেওয়ার সুযোগ নেই। তবে করোনার কারণে মেডিকেলের চিকিৎসা সরঞ্জামাদি হাতে পেতে কিছুটা সময় লেগেছে এবং প্রয়োজনীয় ভবনগুলো সম্পন্ন না হওয়ায় দ্রুত সময়ে মেশিনগুলো স্থাপন করা সম্ভব হয়নি।’ প্রকল্প পরিচালক আরও বলেন, ‘সরকারি-বেসরকারি মিলে পাঁচ শতাধিক জনবল নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এপ্রিল মাসেই এ হাসপাতাল উদ্বোধনের অপেক্ষায় রয়েছে। স্বাস্থ্যমন্ত্রী নির্দেশ পেলেই হাসপাতাল পূর্ণাঙ্গভাবে চালু করা হবে। এজন্য ৫০০ বেড, ১৭টি অপারেশন থিয়েটার, ৮টি ভিআইপি কেবিন, ৮০টি সাধারণ কেবিন, আইসিইউ, সিসিইউ, সার্জারি বিভাগ, কার্ডিওলোজি, শিশু বিভাগ, চক্ষু বিভাগসহ সব প্রয়োজনীয় বিভাগ প্রস্তুত রয়েছে।
Discussion about this post