স্পোর্টস ডেস্ক: চলতি চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমিফাইনালের প্রথম লেগে শক্তিশালী আর্সেনালকে ১-০ গোলে হারিয়ে ফাইনালের পথে এক ধাপ এগিয়ে গেছে প্যারিস সেইন্ট জার্মেই (পিএসজি)। এদিন ফরাসি ক্লাবটির হয়ে একমাত্র গোলটি করেছেন ওসমানে ডেম্বেলে। গতকাল মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) আর্সেনালের ঘরের মাঠ এমিরেটস স্টেডিয়ামে ম্যাচের চতুর্থ মিনিটেই পোস্টে লেগে বল জালে পাঠান ডেম্বেলে। শুরুতে পুরোপুরি দাপট দেখানো পিএসজি গোলটি ধরে রাখে ম্যাচের শেষ বাঁশি বাজার আগ পর্যন্ত। অর্থাৎ সুবিধাজনক অবস্থায় থেকেই ফ্রান্সে ফিরছে লুইস এনরিকের দল। ২০০৯ সালের পর প্রথমবারের মতো সেমিফাইনাল খেলা আর্সেনাল শুরুর ধাক্কা সামলে ম্যাচের শেষ দিকে কিছুটা ঘুরে দাঁড়ায়। এরপর দ্বিতীয়ার্ধে মিকেল মেরিনোর একটি গোল ভিএআরে বাতিল হয় এবং পিএসজি গোলরক্ষক জিয়ানলুইজি ডনারুম্মা অসাধারণ কিছু সেভ দেন। ম্যাচের শেষের দিকে কিছু বড় সুযোগ পেলেও পিএসজির ব্র্যাডলি বারকোলা এবং গনকালো রামোস গোল করতে ব্যর্থ হন। তারা সফল হলে পিএসজিকে আরও বড় ব্যবধানে এগিয়ে যেতে পারত। আগামী বুধবার প্যারিসে যদি পিএসজি লিড ধরে রাখতে পারে, তাহলে ফাইনালে ইন্টার মিলান অথবা বার্সেলোনার মুখোমুখি হবে তারা। ফলাফল আর্সেনালের জন্য বড় ধাক্কা হলেও সবকিছু এখনো শেষ হয়ে যায়নি বলে বিশ্বাস করছেন গোলরক্ষক ডেভিড রায়া। তিনি বলেন, ২৫ মিনিট থেকে আমরা দেখিয়েছি যে আমরা যে কোনো দলের বিপক্ষে জিততে পারি। এই মৌসুমে আমরা প্রমাণ করেছি যে আমরা প্রতিপক্ষের মাঠে জিততে পারি, তাই আমরা আগামী সপ্তাহে প্যারিসে গিয়ে জয়ের জন্যই খেলব। উল্লেখ্য, গত অক্টোবরে গ্রুপ পর্বে আর্সেনাল ঘরের মাঠে পিএসজিকে ২-০ গোলে হারিয়েছিল, কিন্তু লুইস এনরিকের ফরাসি চ্যাম্পিয়নরা এখন অনেক বেশি শক্তিশালী দল। মূলত সেই হারের পর থেকে পিএসজি ইংলিশ লিগের ক্লাবগুলোর জন্য কঠিন প্রতিপক্ষে পরিণত হয়েছে। গ্রুপ পর্বে ম্যানচেস্টার সিটিকে হারিয়েছে, শেষ ষোলোতে প্রিমিয়ার লিগ চ্যাম্পিয়ন লিভারপুলকে বিদায় করেছে এবং কোয়ার্টার ফাইনালে অ্যাস্টন ভিলার সঙ্গে রোমাঞ্চকর লড়াইয়ে জয় পেয়েছে। স্বাগতিক ভক্তদের তুমুল সমর্থনের মধ্যেও পিএসজি প্রথম ২৫ মিনিট একেবারে আর্সেনালকে খেলতেই দেয়নি। তাদের গতি ও মুভমেন্টে কুলিয়ে উঠতে পারেনি মিকেল আরতেতার দল। ম্যাচ শুরুর পূর্বের আতশবাজির ধোঁয়া পুরোপুরি না কাটতেই গোল পায় পিএসজি। খভিচা কভারাত্সখেলিয়া বল নিয়ে বাঁ দিক থেকে ডি বক্সে ঢুকে ডেম্বেলেকে পাস দেন, সেখান থেকে বলটি পোস্টে লেগে জালে পাঠান ফরাসি তারকা। শুরুর দিকে গোল হজম করে ব্যাপক চাপে পড়ে আর্সেনাল। লিয়ান্দ্রো ট্রোসার্ড আক্রমণে ছুটে যাওয়া পিএসজির আশরাফ হাকিমিকে টেনে ধরে হলুদ কার্ড দেখেন এবং মারকুইনহোস হাকিমির ক্রস থেকে সরাসরি আর্সেনাল গোলরক্ষক রায়ার হাতে বল মারেন। প্রথমার্ধে আর্সেনালের জন্য মাথাব্যথার কারণ হয়ে ওঠেন কভারাত্সখেলিয়া। জুরিয়েন টিম্বারের এক সন্দেহজনক চ্যালেঞ্জে পড়ে গেলে তিনি পেনাল্টির দাবি জানান। এরপর গ্যাব্রিয়েল মার্টিনেলি বুকায়ো সাকার ক্রসে গোলের খুব কাছাকাছি গিয়েও বল স্পর্শ করতে পারেননি এবং বিরতির আগমুহূর্তে ডুনারুম্মার দুর্দান্ত সেভে গোলবঞ্চিত হয় আর্সেনাল। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই মনে হচ্ছিল আর্সেনাল সমতায় ফিরেছে। ডেকলান রাইসের ফ্রি কিক থেকে হেডে বল জালে পাঠান মেরিনো। কিন্তু দীর্ঘ ভিএআর চেকের পর অফসাইডের কারণে গোল বাতিল হয়। কিছু সময়ের জন্য ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নেয় আর্সেনাল এবং পিএসজির রক্ষণভাগ কিছুটা নড়বড়ে দেখাতে থাকলে ট্রোসার্ডের নিচু শটটি অসাধারণ দক্ষতায় ঠেকিয়ে দেন ডুনারুম্মা। যদিও পিএসজি শেষ দিকে যে সুযোগগুলো মিস করেছে। বারকোলা একেবারে ফাঁকা থাকার পরও বল বাইরে মেরে দেন। আর রামোসের শট লাগে ক্রসবারে। শেষ পর্যন্ত এগিয়ে থেকেই ফিরতি লেগ খেলা নিশ্চিত করে পিএসজি।
Discussion about this post