ঢাকা: ভারতে চিকিৎসা করাতে গিয়ে হত্যার শিকার ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনারের মেয়ে মুমতারিন ফেরদৌস ডোরিন বলেছেন, ‘আমি আমার বাবার হত্যার বিচার চাই। কারা (হত্যা) করেছে, কেন করেছে- এর সুষ্ঠু তদন্ত চাই। আমি এর শেষ পর্যন্ত দেখতে চাই। আমার বাবাকে যারা হত্যা করেছে, তাদের ফাঁসি কার্যকর করা হয়েছে এটা আমি দেখতে চাই। ’ মঙ্গলবার (২২ মে) দুপুরে ডিবি কার্যালয়ে তিনি এ কথা বলেন। তিনি ডিএমপির শেরে বাংলা নগর থানায় একটি মামলা করবেন বলেও জানিয়েছেন। এর মধ্যে এই ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ তাদের কাউকে চেনেন কি না জানতে চাইলে ডোরিন বলেন, ‘আমি তাদের কাউকেই চিনি না। কিন্তু তাদের চিনতে চাই, জানতে চাই কেন তারা আমার বাবাকে হত্যা করলেন। ’ কাঁদতে কাঁদতে সংসদ সদস্যের কন্যা বলেন, ‘আমি যখন ছোট ছিলাম, আমার বাবা ১৪টা বছর মিথ্যা মামলায় ওলিতে-গলিতে থেকেছেন। আমি যখন একটু বুঝতে শিখেছি, তখন কাছে পেয়েছিলাম। আবার তাকে হারিয়ে ফেললাম। আপনাদের কাছে অনুরোধ, আপনারা আমাকে সহযোগিতা করবেন। আমি আমার সচক্ষে দেখতে চাই, কারা আমার বাবাকে হত্যা করলো, এভাবে আমাকে এতিম করলো। ’ যারা আমার বাবাকে হত্যা করেছে আমি তাদের বিচার চাই, ক্রস কিংবা ফাঁসিতে ঝুলতে দেখতে চাই। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমার মায়ের মতো। তিনি অনেক সাহায্য করছেন আমাদের, তার কাছেও আমরা বিচারের আর্জি জানাই।’ পরিবার থেকে কাউকে সন্দেহ করা হচ্ছে কিনা জানতে চাইলে ডরিন বলেন, ‘আমরা এখনো কাউকে সন্দেহ করতে পারছি না। ’ বড় কন্যা চিকিৎসক আর ছোটকন্যা ডোরিন একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইনে পড়ছেন। ডোরিন বলেন, ‘সর্বশেষ বাবার সঙ্গে তার ভিডিও কলে কথা হয়েছিল। বাবা তাকে বলেছিলেন, তিনি দুদিনের মধ্যেই ভারত থেকে ফিরবেন। তিনি ঢাকায় ফিরে তাকে দাঁতের ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাবেন। ’ ডোরিন বলেন, ‘আমার বাবাকে হত্যা করা হয়েছে খবর পেয়ে আমি ডিবি প্রধান হারুন আঙ্কেলের সঙ্গে দেখা করতে এসেছি। আমরা মামলা করতে চাই সে বিষয়ে তাদের সহায়তা নিতে এসেছি।’ পরে ডিবির অতিরিক্ত কমিশনার হারুন অর রশিদ সাংবাদিকদের বলেন, ‘তার কন্যা আমাদের কাছে এসেছে। তিনি মামলা করতে চান। আমরা বলেছি সর্বশেষ তিনি যে জায়গা থেকে ভারতের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছেন সেখানেই মামলাটা করতে হবে। তিনি এমপি হোস্টেল থেকে বেরিয়ে ভারতের উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছিলেন বলে তার কন্যা জানিয়েছেন। সে কারণে আমরা তাকে শেরেবাংলা নগর থানায় মামলা করার পরামর্শ দিয়েছি। ’ হারুন অর রশিদ বলেন, ‘এ ঘটনায় কয়েকজনকে আমরা গ্রেপ্তার করেছি। তাদের সঙ্গে আমরা কথা বলছি। এই হত্যার মোটিভ কি সেটা জানার চেষ্টা করছি। তিনি একজন জনপ্রিয় সংসদ সদস্য ছিলেন। ’ গত ৮ দিন ধরে নিখোঁজ থাকার পর কলকাতার নিউ টাউনের বিলাসবহুল আবাসন ‘সঞ্জিভা গার্ডেন’ থেকে ঝিনাইদহ-৪ আসনের সরকারদলীয় এই এমপির মরদেহ উদ্ধার করার কথা জানায় স্থানীয় পুলিশ। চিকিৎসার জন্য কলকাতায় গিয়ে এমপি আনোয়ারুল আজিম তার যে বন্ধুর বাড়িতে উঠেছিলেন, সেই গোপাল বিশ্বাস বুধবার সকালে পুলিশের কাছ থেকে আনারের লাশ উদ্ধারের খবর পান বলে গণমাধ্যমে জানিয়েছেন।
Discussion about this post