আন্তর্জাতিক ডেস্ক: আফগানিস্তানের বালখের প্রধান শহর মাজার ই শরিফের শিয়া মসজিদে বোমা হামলার অভিযোগে আবদুল হামিদ সানগারইয়ার নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে দেশটির আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। গ্রেফতারকৃত সানগারইয়ারই গতকাল বৃহস্পতিবার শহরের সেহ দোকান মসজিদে বোমা হামলার মূল পরিকল্পনাকারী ছিলেন বলে দাবি করেছেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তারা। বালখ প্রাদেশিক পুলিশের মুখপাত্র আসিফ ওয়াজিরি এ সম্পর্কে বার্তাসংস্থা এএফপিকে বলেন, ‘মাজার ই শরিফে হামলার মাস্টারমাইন্ড ছিল আবদুল হামিদ সানগারইয়ার। অতীতে সে বেশ কয়েকটি হামলা করেছে। তবে প্রতিবারই খুব দ্রুত গা ঢাকা দিত সে। এবার একটি বিশেষ অভিযান চালিয়ে আমরা তাকে গ্রেপ্তার করেছি।’ বৃহস্পতিবার আফগানিস্তানের ২ উত্তরাঞ্চলীয় শহর মাজার ই শরিফ ও কুন্দুজে পৃথক দু’টি বোমা হামলায় নিহত হন ২৩ জন আহত হন আরও বহুসংখ্যক। আহতদের মধ্যে অনেকের অবস্থা আশঙ্কাজনক। বৃহস্পতিবার দুপুরে আফগাস্তিানের উত্তরপশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশ বালখের প্রধান শহর মাজার ই শরিফের সেহ দোকান মসজিদে বোমা হামলা হয়। এটি একটি শিয়া মসজিদ এবং বিস্ফোরণের সময় মসজিদটিতে জোহরের নামাজ চলছিল। আফগানিস্তানের স্থানীয় সংবাদমাধ্যম ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিস্ফোরণে ঘটনাস্থলেই নিহত হন ১২ জন এবং আরও ৫৮ জনকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। আহতদের মধ্যে ৩২ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। মাজার ই শরিফে হামলার কাছাকাছি সময়ে বিস্ফোরণ ঘটে দেশটির উত্তরাঞ্চলীয় অপর প্রদেশ কুন্দুজের রাজধানী কুন্দুজেও। এতে নিহত হয়েছেন ১১ জন। কুন্দুজের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মুখপাত্র ওবায়দুল্লাহ আবেদি এএফপিকে বলেন, বৃহস্পতিবার দুপুরের দিকে তালেবান সরকারের অধীনে চাকরিরত মেকানিকদের একটি বাসকে লক্ষ্য করে বাইসাইকেল বোমার বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। এতে বাসের ভেতর থাকা মেকানিকদের মধ্যে ৪ জন ঘটনাস্থলেই নিহত হন, আহত হন আরও ১৮ জন। আহতদের হাসপাতলে নেওয়ার পর মারা যান আরও ৭ জন। ইতোমধ্যে দু’টি শহরে হামলার দায় স্বীকার করেছে আন্তর্জাতিক জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেটের আফগানিস্তান শাখা ইসলামিক স্টেট-খোরাসান (আইএস-কে)। গত বছর আগস্টে আফগানিস্তানের ক্ষমতা দখল করে তালেবান গোষ্ঠী। তারপর গত কয় মাসে বেশ কয়েকটি প্রাণঘাতী বোমা বিস্ফোরণ হয়েছে দেশটির বিভিন্ন শহরে। তালেবান গোষ্ঠী আফগানিস্তানকে বিদেশি প্রভাবমুক্ত একটি কট্টর ইসলামি রাষ্ট্র হিসেবে দেখতে ইচ্ছুক। অন্যদিকে আইএস-কে চায়, তুরস্ক থেকে আফগানিস্তান হয়ে পাকিস্তান ও উপমহাদেশে খিলাফত প্রতিষ্ঠিত হোক।
Discussion about this post