ঢাকা: বিএনপির ২৮ অক্টোবরের সমাবেশের পর রাজধানীতে দেশের দুই বড় রাজনৈতিক দলের পাল্টাপাল্টি সামবেশ দেখা যায়নি। নতুন করে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও বিএনপি রাজধানী একই দিন সমাবেশ ডেকেছে। আজ শনিবার (২৯ জুন) নয়াল্টনে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। অন্যদিকে, দলের ৭৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে সমাবেশ করবে আওয়ামী লীগ। খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে দুপুর ২টায় নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে বিএনপির সমাবেশ ডাকা হয়েছে। এই সমাবেশে বড় জমায়েত করে ঘুরে দাঁড়ানোর বিষয়টি জানান দিতে চায় দলটি। এ লক্ষ্যে নেওয়া হয়েছে ব্যাপক প্রস্তুতি। সমাবেশের প্রস্তুতির বিষয়ে নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এতে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী বলেন, ঢাকায় বড় ধরনের জমায়েতের প্রস্তুতি রয়েছে বিএনপির। এর মধ্যেই সমাবেশের জন্য পুলিশ কমিশনারের দপ্তরে চিঠি পাঠানো হয়েছে। বিএনপির একটি প্রতিনিধিদল পুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকও করেছে। সমাবেশ সফল করার জন্য বিএনপি জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসকে সমন্বয়ক করে পর্যায়ক্রমে নানা প্রস্তুতিমূলক সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এটি ঐতিহাসিক সমাবেশ হবে এমন আশাবাদ ব্যক্ত করে রিজভী ঢাকাবাসীসহ দলের সব স্তরের নেতাকর্মীদের যথাসময়ে সমাবেশে উপস্থিত থাকার জন্য আহ্বান জানান। জানা যায়, দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়সহ জ্যেষ্ঠ নেতারাও সমাবেশ সফলে কাজ করছেন। সমাবেশে বড় ধরনের শোডাউন ঘটাতে এরই মধ্যে কেন্দ্র থেকে দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতাদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সংশ্লিষ্ট নেতারা জানান, খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে সমাবেশের কর্মসূচি বাস্তবায়নে সদ্য বিলুপ্ত দলের ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ এবং কেন্দ্রীয় যুবদলের সাবেক নেতাদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তাঁরা জানিয়েছেন, নতুন কমিটি সামনে রেখে এই সমাবেশ দিয়ে দলের পক্ষ থেকে পদপ্রত্যাশী নেতাদের পারফরম্যান্স যাচাই করা হবে। দলের নেতারা জানান, নতুন কমিটিকেন্দ্রিক আবহ থাকায় বিষয়টি মাথায় রেখে নিজ নিজ কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে সমাবেশে আলাদাভাবে ব্যাপক শোডাউনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন পদপ্রত্যাশী নেতারা। এ ছাড়া কর্মসূচিতে ঢাকার পার্শ্ববর্তী জেলা ও মহানগরগুলো থেকেও বিএনপির নেতাকর্মীরা আসবেন। অংশ নেবেন অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরাও। ছাত্রদলের সদ্যঘোষিত পূর্ণাঙ্গ কমিটিকেও সমাবেশে সর্বোচ্চ অংশগ্রহণ নিশ্চিতের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। বিএনপির একাধিক নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সমাবেশে ব্যাপক জনসমাগমের মধ্য দিয়ে খালেদা জিয়ার মুক্তিতে সরকারের ওপর বড় ধরনের চাপ সৃষ্টি করতে চান তাঁরা। বিএনপির সমাবেশের দিনে রাজধানীতে সতর্ক অবস্থানে থাকবে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। দলের একাধিক সূত্র জানায়, বিএনপিকে রাজপথে কোনো অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরির সুযোগ দিতে চায় না আওয়ামী লীগ। এ কারণে সতর্কতামূলক পদক্ষেপ হিসেবে রাজধানীতে মাঠে থাকবেন দলের নেতাকর্মীরা। এদিকে বিকেল ৩টায় বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে দলীয় কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ ডেকেছে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ। দলের প্লাটিনাম জয়ন্তী উপলক্ষে এ সমাবেশ ডাকা হয়েছে। সমাবেশে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের প্রধান অতিথি থাকবেন। ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু আহমেদ মন্নাফীর সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক হুমায়ূন কবিরের পরিচালনায় সমাবেশে দলের গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রীয় নেতারা বক্তব্য দেবেন। দলীয় একাধিক সূত্র জানায়, সমাবেশ সফল করতে ঢাকা মহানগর দক্ষিণের প্রতিটি ওয়ার্ডের নেতাকর্মীদের উপস্থিত থাকার জন্য দলের পক্ষ থেকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের দুই দলের একই দিনের কর্মসূচিকে পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি বলতে রাজি নন। তিনি গতকাল রাজধানীতে এক অনুষ্ঠানে বলেন, ‘আওয়ামী লীগ কোনো পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি দিচ্ছে না। আওয়ামী লীগের বছরব্যাপী কর্মসূচি আগেই ঘোষিত হয়েছে। কেন্দ্রের পর মহানগর এবং আওয়ামী লীগের সব সহযোগী সংগঠন প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করবে। ’
Discussion about this post