ঢাকা: হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় পার্বণ শারদীয় দুর্গোৎসবে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে সারাদেশে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) মোতায়েন করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকালে বিজিবির পরিচালক (অপারেশন) লে. কর্নেল ফয়জুর রহমান এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। বিজিবি জানায়, জেলা প্রশাসনের চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে দুর্গাপূজার নিরাপত্তা রক্ষার্থে দেশব্যাপী বিভিন্ন জেলায় বিজিবি মোতায়েন করা হচ্ছে। এখন পর্যন্ত কুমিল্লা, ঢাকা বিভাগের নরসিংদী, মুন্সীগঞ্জসহ ২২টি জেলায় প্রয়োজনীয়সংখ্যক বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের চাহিদা থাকলে রাজধানী ঢাকাতেও বিজিবি মোতায়েন করা হবে। গতকাল বুধবার কুমিল্লায় একটি পূজামণ্ডপে কোরআন অবমাননার অভিযোগ ওঠার পর সেখানে উত্তেজনা দেখা দেয়। স্থানীয় প্রশাসন পরিস্থিতি সামাল দেয়। মোতায়েন করা হয় বিজিবি। তবে এই ঘটনার জেরে রাতে চাঁদপুরের হাজীগঞ্জে বিক্ষোভ মিছিল বের করলে স্থানীয়দের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষায় সরকার কঠোর অবস্থানে রয়েছে। এ ধরনের ঘটনার সঙ্গে জড়িত কেউ রেহাই পাবে না বলে ইতিমধ্যে হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে সরকারের পক্ষ থেকে। এছাড়া সারাদেশে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীও সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। বুধবার রাতে দুর্গা পূজার মহাষ্টমীর শুভেচ্ছা প্রদান অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, কুমিল্লায় পূজামণ্ডপে কোরআন অবমাননার যে অভিযোগ ওঠেছে সেই ঘটনার পেছনে সাম্প্রদায়িক অপশক্তির হাত রয়েছে। তবে যারাই এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত তাদের আইনের আওতায় আনা হবে, কেউ ছাড় পাবে না বলে জানান তিনি। হিন্দুদের মন্দিরে যারা হামলা চালায় তারা দলীয় পরিচয়ের হলেও ছাড় দেওয়া হবে না হুঁশিয়ারি দেন সরকারের এই মুখপাত্র। বুধবার রাতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল গণমাধ্যমকে বলেন, কুমিল্লার ঘটনা আমার মনে হয় কেউ ‘সাবোটেজ’ করে করেছে কি না, এটা দেখার বিষয়। আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি, এভাবে ঘটনা ঘটানোর সাহস, বিশ্বাস হচ্ছে না। তারপরেও দেখা যাক, সবকিছু এখন কন্ট্রোল করার চেষ্টা করা হচ্ছে। উদ্ধার করব প্রকৃত ঘটনা কী? প্রশাসনকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, দোষীদের আইনের আওতায় আনা হবে। রাতে রমনার একটি পূজা মন্দির পরিদর্শনে গিয়ে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) মহাপরিচালক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন বলেন, ধর্মীয় সম্প্রীতির বাংলাদেশে সব সম্প্রদায়ের মানুষ মুক্ত পরিবেশে ও নির্বিঘ্নে নিজ নিজ ধর্মীয় আচার–অনুষ্ঠানাদি পালন করে। কোনো দুষ্কৃতিকারী বা উস্কানিদাতা যদি উদ্দেশ্যমূলকভাবে ধর্মীয় সম্প্রীতি বিনষ্ট করার চেষ্টা করে তাহলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
Discussion about this post