নড়াইল প্রতিনিধি: নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার চরবকজুড়ি গ্রামে স্ত্রী মুক্তামনি বেগমকে শ্বাসরোধে হত্যার দায়ে স্বামী লাভলু মীরকে (৫২) ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। গতকাল সোমবার বিকেলে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনালের (জেলা ও দায়রা জজ আদালত) বিচারক সানা মো. মাহরুফ হোসাইন এ রায় দেন। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত লাভলু লোহাগড়ার চরবকজুড়ি গ্রামের লায়েব আলী মীরের ছেলে। রায় ঘোষণার সময় লাভলু মীর আদালতে উপস্থিত ছিলেন। আদালত সূত্রে জানা গেছে, স্ত্রী মুক্তামনিকে শ্বাসরোধে হত্যার পর পরিকল্পিতভাবে প্রচার করা হয় নদীতে ডুবে তার মৃত্যু হয়েছে। পরবর্তীতে ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে শ্বাসরোধে হত্যা বলে প্রমাণিত হয়। মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০০৭ সালে লাভলু মীরের সঙ্গে মুক্তামনি বেগমের বিয়ে হয়। বিয়ের পর স্বামী লাভলু বিভিন্ন সময়ে শ্বশুরবাড়ির লোকজনের কাছে দুই লাখ টাকা যৌতুক দাবি করেন। দাবিকৃত টাকা না পেয়ে ২০১২ সালের ২১ মে চরবকজুড়ি গ্রামে নিজবাড়িতে স্ত্রী মুক্তামনিকে শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতসহ শ্বাসরোধে হত্যা করে। এরপর লাশ গুম করার জন্য মধুমতি নদীতে ফেলে দেয়। পরে প্রচার করা হয় মুক্তামনি নদীতে ডুবে মারা গেছেন। এ সময় মুক্তা মনি চার মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন। এর আগে তাদের দাম্পত্য জীবনে একটি ছেলে সন্তানের জন্ম হয়। এ ঘটনায় নিহতের বোন সালেহা সুলতানা বাদী হয়ে লাভলু মীরসহ পাঁচজনকে আসামি করে ২০১২ সালের ৪ জুন লোহাগড়া থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের করেন। দীর্ঘ বিচারিক প্রক্রিয়া শেষে আদালত গতকাল সোমবার এ রায় ঘোষণা করেন। এর মধ্যে স্বামী লাভলু মীরকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হলেও অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় চারজনকে খালাস দেন আদালত।
Discussion about this post