ঢাকা : জনসভার স্থান পছন্দ না হওয়ায় আজ বৃহস্পতিবারের পরিবর্তে একদিন পিছিয়ে আগামীকাল শুক্রবার ঢাকার নয়াপল্টনেই মহাসমাবেশ করার সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছে দলটি। অন্যদিকে বায়তুল মোকাররম মসজিদের দক্ষিণের গেটে শান্তি সমাবেশের অনুমতি না পাওয়ায় আওয়ামী লীগের তিন সংগঠন যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও ছাত্রলীগ তাদের নির্ধারিত শান্তি সমাবেশ একদিন পিছিয়ে শুক্রবার রাজধানীর পুরাতন বাণিজ্য মেলার মাঠে করবে। ঢাকা মহানগর পুলিশের পক্ষ থেকে গোলাপবাগ মাঠে মহাসমাবেশের অনুমতি পাওয়ার পর আজকের মহাসমাবেশ ঘিরে দ্বিধাদ্বন্দ্ব সৃষ্টি হয় বিএনপিতে। দফায় দফায় বৈঠকের পর রাতে দলটি আগামীকাল শুক্রবার নির্ধারিত মহাসমাবেশ করার সিদ্ধান্ত নেয়। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর গুলশানের রাজনৈতিক কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে জানান, বর্তমান সরকারের পদত্যাগ এবং সংসদ বিলুপ্তির এক দফা সামনে রেখে ঢাকায় আজ মহাসমাবেশের তারিখ পিছিয়ে আগামীকাল শুক্রবার করা হবে। এদিকে, বায়তুল মোকাররম মসজিদের দক্ষিণ গেটে শান্তি সমাবেশ করার সম্পূর্ণ প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছিল আওয়ামী লীগের তিন সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন আওয়ামী যুবলীগ, আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগ এবং বাংলাদেশ ছাত্রলীগ। লাখো নেতাকর্মীর স্রোত নামিয়ে এই সমাবেশ সফল করার ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণের পর বুধবার ডিএমপির পক্ষ থেকে সেখানে সমাবেশ না করার নির্দেশনা দেওয়া হয়। এরপর ঢাকা মহানগর নাট্যমঞ্চ এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জিমনেশিয়াম মাঠে শান্তি সমাবেশ করার অনুমতি চেয়েও তারা পায়নি। শেষ পর্যন্ত বিকল্প হিসেবে রাজধানীর পুরনো বাণিজ্যমেলার মাঠ পরিদর্শনে গিয়ে সেখানে মাত্র ১২ ঘণ্টার নোটিসে এত বড় সমাবেশ করা অসম্ভব হওয়ায় তারাও তাদের নির্ধারিত সমাবেশ আজ বৃহস্পতিবারের পরিবর্তে আগামীকাল শুক্রবার বিকেল তিনটায় করার সিদ্ধান্ত নেয়। এদিকে বড় দুই দলের পাল্টাপাল্টি মহাসমাবেশ ও শান্তি সমাবেশকে ঘিরে সারাদেশের মানুষের দৃষ্টি ছিল রাজধানী ঢাকার দিকে। কিন্তু সময় ও স্থান পরিবর্তন হলেও আগামী শুক্রবার রাজধানীতে আবার এই বড় দুই দল তাদের নির্ধারিত কর্মসূচি পালন করবে। ফলে মানুষের মধ্যে এ নিয়ে যে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার সৃষ্টি হয়েছিল, তা এখনো রয়েই গেছে। কেননা বিএনপির মহাসমাবেশের বিপরীতে আওয়ামী লীগের শান্তি সমাবেশেও লাখো মানুষের ঢল নামানোর ব্যাপক প্রস্তুতিতে দেশজুড়ে বিরাজ করছে উদ্বেগ, উৎকন্ঠা। ’ বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আমরা আশা করি দেশে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে চলমান গণতান্ত্রিক ও শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের অংশ হিসাবে আয়োজিত এই মহাসমাবেশ অনুষ্ঠানে সরকার কিংবা সরকারের কোনো প্রতিষ্ঠান বাধা সৃষ্টি করবে না। আসন্ন নির্বাচনকে সামনে রেখে আয়োজিত যে কোনো গণতান্ত্রিক কর্মসূচি বাধাগ্রস্ত করার যে কোনো অপচেষ্টা দেশবাসী প্রকৃতপক্ষে সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনে বাধা সৃষ্টি হিসাবেই দেখবে এবং এমন অপচেষ্টায় নিয়োজিতদের গণতন্ত্র ও সুষ্ঠু নির্বাচনে বাধা সৃষ্টিকারী হিসাবেই গণ্য করবে।’ আওয়ামী লীগের তিন সংগঠন ॥ পূর্বনির্ধারিত ঘোষণা অনুযায়ী বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ গেটের পরিবর্তে রাজধানীর আগারগাঁওয়ের পুরনো বাণিজ্য মেলার মাঠে শান্তি সমাবেশ করবে ক্ষমতাসীন দলের তিন সংগঠন যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও ছাত্রলীগ। শুক্রবার রাজধানীতে দুপুরে এ সমাবেশ হবে। স্বেচ্ছাসেবক লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি গাজী মেজবাউল হোসেন সাচ্চু বলেন, বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ গেটে সমাবেশের পরিবর্তে শুক্রবার পুরনো বাণিজ্য মেলার মাঠে যৌথ সমাবেশ করবে যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও ছাত্রলীগ। এদিকে আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া জানান, আগারগাঁওয়ের বাণিজ্য মেলা মাঠটি সমাবেশের জন্য উপযোগী নয়। তাই বৃহস্পতিবারের সমাবেশ এক দিন পিছিয়ে শুক্রবার করা হয়েছে।
Discussion about this post