মাদারীপুর প্রতিনিধি: মাদারীপুরে অস্বাভাবিক হারে বেড়েছে ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। গত এক সপ্তাহে জেলা সদর হাসপাতালেই ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন আড়াইশ’ রোগী। যার ৮০ ভাগই শিশু। অতিরিক্ত রোগীর চাপ সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। পরিস্থিতি মোকাবেলায় খাবার খাওয়ার আগে ও পরে হাত ধোঁয়াসহ তরলজাত খাবার খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন সিভিল সার্জন। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, মাদারীপুরে ক্রমে বেড়েই চলছে ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। জেলা সদর হাসপাতালে সমান তালে আসছেন রোগীরা। প্রতিদিন গড়ে সেবা নিচ্ছেন অর্ধশত রোগী, এছাড়া ভর্তি হচ্ছেন ৩০ জনেরও বেশি। গত এক সপ্তাহেই চিকিৎসা নিয়েছেন আড়াইশ’ রোগী। যার অধিকাংশই শিশু ও বৃদ্ধ। রোগীর তুলনায় হাসপাতালের আসন সংখ্যা সীমিত হওয়ায় মেঝেতে দেয়া হচ্ছে চিকিৎসা। একদিকে গরমের অসহ্য যন্ত্রনা, অন্যদিকে রোগী চাপ বেড়ে যাওয়ায় পর্যাপ্ত সেবা না পাওয়ায় ক্ষুব্ধ রোগী ও স্বজনরা। এদিকে জেলা সদর হাসপাতালে ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগীদের সেবা দিতে মাত্র একজন নার্স কর্মরত রয়েছেন। আর ১শ’ শয্যার এই হাসপাতালে ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগীর জন্য আসন সংখ্যা মাত্র ৬টি। দুই বছর আগে ত্রিশ কোটি টাকা ব্যয়ে আড়াইশ’ শয্যার একটি আধুনিক হাসপাতাল নির্মাণ করে স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতর। জনবল সংকটে এটিও চালু করা যাচ্ছে না। এই হাসপাতালটি চালু হলে স্বাস্থ্য সেবার মান বাড়বে বলে প্রত্যাশা করছেন রোগী, স্বজন ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। মাদারীপুর পৌরসভার সৈয়দারবালী এলাকার গৃহিনী রিনা মালো বলেন, ‘ছেলে অসুস্থ হওয়ার পর হাসপাতালে নিয়ে আসি। বেড না পাওয়ায় ফ্লোরে চিকিৎসা নিচ্ছি। হাসপাতালের স্বাস্থ্যসেবার মান বাড়ানোর পাশাপাশি আসন সংখ্যাও বাড়ানো দরকার।’ কাজীরটের ফেরিঘাট থেকে আসা বৃদ্ধ আনোয়ার মিয়া বলেন, ‘গরীব মানুষ। তাই সরকারি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছি। কিন্তু নিচে থেকেই চিকিৎসা নিতে হচ্ছে। মাত্র একজন নার্স সবসময় সেবা দিচ্ছে।’ মাদারীপুর জেলা সদর হাসপাতালের সিনিয়র স্টাফ নার্স সুচিত্রা বাগচী বলেন, ‘অতিরিক্ত রোগীর চাপে চিকিৎসা দিতে নাজেহাল অবস্থা। জরুরীভিক্তিতে অতিরিক্ত জনবল নিয়োগ দেয়া দরকার। একসাথে অনেক রোগী আসলে চিকিৎসা দেয়া কষ্ট হয়। তবুও সাধ্যমতো সেবা দিয়ে যাচ্ছি।’ মাদারীপুর জেলা সদর হাসপাতালের তত্ত্ববধায়ক ডা. মনির আহম্মেদ খান জানান, পঁচা-বাসি খাবার এড়িয়ে চলতে হবে। পাশাপাশি পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন থাকার অনুরোধ হচ্ছে। এছাড়া আবহাওয়া পরিবর্তনের কারণেও এই ডায়রিয়া বেড়েছে। শিশুদের প্রতি বাবা-মায়ের পর্যাপ্ত খেয়াল রাখতে হবে।’
Discussion about this post