ঢাকা : এক কেজি মাংস ৭১০ টাকা দিয়ে। এক হাজার টাকার নোটের বাকি ২৯০ টাকা আদা, রসুন, মসলা আর আলু কিনতেই শেষ। ঢাকায় একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন হাবিবুর রহমান।২০ দিন পরিবারের জন্য গরুর মাংস কিনতে এসে দেখলেন হাজার টাকার প্রায় শেষ। হাবিবুর রহমানের বাসা সাতরাস্তা বেগুনবাড়ী এলাকায়। জানতে চাইলে তিনি বলেন, ২০ দিন আগে মাংস কিনেছিলাম ৬৫০ টাকায় আর এখন ৭১০- দাম বাড়ল ৬০ টাকা। তবে বেতন এক টাকাও বাড়েনি। আর সয়াবিন তেলের কথা কী বলব। সব কিছুর দাম এত বেশি যে বাজারের ব্যাগ এক হাজার টাকায়ও ভরে না। ’ তিনি বলতে থাকেন, ‘সরকার যতই বলছে মাথাপিছু আয় বেড়েছে, কিন্তু আমি দেখছি আমার আয় বাড়েনি। হিসাবের টাকার সংসারে আজ এটা নাই তো কাল ওটা নাই। ’ তিনি আরও বলেন, ‘বাড়িভাড়া, ছেলেমেয়ের স্কুলের খরচ—সব কিছু মিলিয়ে বারবার হিসাব করতে হচ্ছে বেতনের টাকায়। ’ দেশে খাবারসহ নিত্যপণ্যের দাম বাড়ছে। সেই হিসাবে বাড়েনি আয়। তাই হিসাব মেলানো কঠিন হয়ে পড়েছে হাবিবুর রহমানের মত চাকরিজীবীদের। নানা উপায়ে এই হিসাব মেলানোর চেষ্টা করছেন নির্দিষ্ট আয়ের এই মানুষগুলো। কারওয়ান বাজারে সবজির দাম নিয়ে মফিজুর বলেন, ‘বাজারে কোনো সবজি ৬০ টাকার নিচে নাই। আমি বেতন পাই ১৬ হাজার টাকা। এই টাকা দিয়ে খাওয়া খরচ মেটাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। আগে ২০০ টাকা হলে মোটামুটি তিন-চার ধরনের সবজি কেনা যেত, এখন তা আর কেনা যাচ্ছে না। ’ আজিমপুরে একটি মুদি দোকান থেকে তেল কিনছিলেন রহিমা বেগম। তেল নিয়ে প্রশ্ন করতেই যেন তেলে-বেগুনে জ্বলে ওঠেন তিনি। ক্ষুব্ধ কণ্ঠে বললেন, ‘আর কত কম তেলে রান্না করা যায়। আগে মাসে তেল লাগত পাঁচ লিটার, এখন দুই লিটারে সংসার চালাচ্ছি; আর কত কম দেওয়া যায় বলেন? বেতন যা তা-ই আছে। এদিকে শুধু খাবার খরচই বেড়েছে কয়েক গুণ। ’ খাবারের দাম বেড়ে যাওয়ায় সকালের নাশতায় ছাড় দিচ্ছেন বেসরকারি চাকরিজীবী আনিসুর হক। তবে এখন তাঁর নাশতা হয় শুধু বিস্কুট দিয়ে। তিনি বলেন, ‘তেলের দাম বাড়ার পর একটি পরোটার দামই নিচ্ছে ১০ টাকা। আর ডিম ২৫ টাকা। দুটি পরোটা, ডিম আর একটু ডাল খেলেই খরচ ৬৫ টাকা। আগে লাগত ৩৫ টাকা। তাই জীবন চালাতে নতুন পথ বের করেছি। ’
Discussion about this post