ঢাকা: প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল জানিয়েছেন, সম্পূর্ণ ইভিএমে ভোট নেওয়ার বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। ইভিএম এর বিষয়ে রাজনৈতিক দলের মতামত বিবেচনা করবে কমিশন। মঙ্গলবার (১০ মে) সকালে কমিশনের প্রশিক্ষণ ভবনে ভোটার তালিকা হালনাগাদ উপলক্ষে আয়োজিত এক প্রশিক্ষণ কর্মশালায় তিনি এ তাগিদ দেন। সিইসি বলেন, নির্বাচন নিয়ে সরকারের দেওয়া বক্তব্যে কোনো চাপে পড়ছে না কমিশন। এছাড়া কাউকে ভোটের মাঠে আনা কমিশনের কাজ নয়। সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানই কমিশনের মূল দায়িত্ব বলে জানান তিনি তিনি বলেন, ঠিকঠাক ভোটার তালিকা না হলে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব না। ধৈর্য ও সততার সঙ্গে নির্ভুল ভোটার তালিকা তৈরি করতে হবে। সিইসি বলেন, জাতীয় নির্বাচনসহ সব ধরনের নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করতে বদ্ধপরিক নির্বাচন কমিশন। আগামী কুমিল্লা সিটিসহ স্থানীয় নির্বাচনগুলো যাতে সুষ্ঠু হয় তার জন্য কমিশন সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। ভোটার তালিকা হালনাগাদের কর্মীদের উদ্দেশ্যে সিইসি বলেন, আগামী ২০ মে থেকে সারাদেশে ভোটার তালিকা হালনাগাদের কাজ শুরু হচ্ছে। স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের পূর্বশর্ত স্বচ্ছ ভোটার তালিকা। সে জন্য আপনাদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোটার তালিকা হালনাগাদের কাজ করতে হবে। সে ক্ষেত্রে কোনো ভোটার যাতে বাদ না পড়ে সে দিকে লক্ষ্য রাখার নির্দেশ দেন তিনি। তিনি বলেন, এবার হালনাগাদ কার্যক্রম মোট চার ধাপে শেষ করা হবে। প্রথম ধাপে ১৪০ উপজেলায় ২০ মে থেকে ৯ জুন পর্যন্ত তথ্য সংগ্রহ করা হবে। এ সময়ে নির্বাচন কমিশনের তথ্য সংগ্রহকারীরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে নতুন ভোটারের তথ্য সংগ্রহ করবেন। ইসি জানায়, এবারের ভোটার তালিকা হালনাগাদ কার্যক্রমে দুই বছরের অগ্রিম তথ্যসহ মোট তিন বছরের তথ্য নেওয়া হবে। যাদের জন্ম ১ জানুয়ারি ২০০৭ বা তার পূর্বে অর্থাৎ ২০২৫ সালের ১ জানুয়ারি পর্যন্ত যে সব ব্যক্তির বয়স ১৮ বছর পূর্ণ বা বেশি তাদের তথ্য সংগ্রহ করা হবে। এ কার্যক্রমে ১ জানুয়ারি ২০০৫ বা তার পূর্বে যাদের জন্ম তাদের ২ জানুয়ারি ২০২৩, ১ জানুয়ারি-২০০৬ বা তার আগে যাদের জন্ম তাদের ২ জানুয়ারি ২০১৪ তারিখে এবং ১-১-২০০৭ বা তার পূর্বে যাদের জন্ম তাদের ২ জানুয়ারি ২০২৫ তারিখে নিবন্ধিত ভোটার হিসেবে খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হবে। হালনাগাদে সম্ভাব্য ভোটার বৃদ্ধির হার ৭.৫০ শতাংশ। এছাড়া এর আগে বিভিন্ন কারণে যারা ভোটার তালিকায় নাম অন্তর্ভুক্ত করতে পারেননি তাদেরও হালনাগাদে ভোটার করা হবে। ভোটার তালিকা হালনাগাদ কার্যক্রমে মৃত ভোটরের তথ্যও সংগ্রহ করা হবে। এসময় ভোটার স্থানান্তরের আবেদনও করা যাবে। ভোটার তালিকায় নাম অন্তর্ভুক্তির জন্য যে সব ডকুমেন্টস প্রয়োজন হবে এরমধ্যে রয়েছে- ১৭ ডিজিটের অনলাইন জন্ম নিবন্ধন সনদ, শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ, পিতা/মাতার এনআইডির ফটোকপি, ইউটিলিটি বিলের কপি। এবারের হালনাগাদ কার্যক্রমে প্রায় ৫৬ হাজার তথ্যসংগ্রহকারী এবং ১১ হাজার ৩০০ সুপারভাইজার নিয়োগ করা হয়েছে। তাদের দিনব্যাপী হাতে কলমে নিবিড়ি প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। নির্বাচন কমিশন সচিবালয় ও মাঠপর্যায়ের অভিজ্ঞ কর্মকর্তারা তথ্যসংগ্রহকারী ও সুপারভাইজারদের প্রশিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন।
Discussion about this post